প্রবাসের সংবাদ

লিবিয়ার মানবপাচারের টর্চার সেলের মালিক ঢাকায় গ্রেপ্তার

লিবিয়ার মানবপাচারের টর্চার সেলের মালিক ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লিবিয়া থেকে ইউরোপের দেশে মানবপাচারের টর্চার সেলের মালিককে ঢাকায় আটক করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম। তিনি হলেন- বাদশা মিয়া। ১৩ বছর যাবৎ তিনি লিবিয়াতে ছিলেন। লিবিয়ার বেনগাজী, জোয়ারা শহরে তার মানবপাচারের টর্চার সেল আছে। সারা বাংলাদেশ থেকে সে নিয়মিত লিবিয়াতে মানবপাচার করে। পাচারকৃত বাংলাদেশিদেরকে তার লিবিয়ায় টর্চার সেলে আটকে রেখে নির্যাতন করে সমুদ্রপথে ইতালীতে পাঠানোর গেইমবিং করতো। ২৮শে মে লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশীকে হত্যার ঘটনার আগে মাদারীপুরের ৪ জন তার ক্যাম্পে আটক ছিলেন। পরে তাদেরকে ত্রিপোলীতে পাচার করার পর এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

বাদশা মিয়া ছাড়া গোয়েন্দারা লিবিয়ার ঘটনায় আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ।

তারা হলো- জাহাঙ্গীর মিয়া, আকবর আলী, সুজন, নাজমুল হাসান ও লিয়াকত শেখ ওরফে লিপু। গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের একাধিক টিম রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের হেফাজত হতে চারটি পাসপোর্ট, দুইটি মোবাইল ফোন ও টাকার হিসাব সম্মলিত দুইটি নোট বুক উদ্ধার করা হয়।
গতকাল ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে ব্রিফিংকালে ডিবি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আবদুল বাতেন বলেন, ২৮শে মে লিবিয়ার মিসদাহ উপ-শহরের মরুভুমিতে ২৬ জন বাংলাদেদেশীকে গুলি করে হত্যা করা হয়। মারাত্বক ভাবে আহত করা হয় আরো ১১ জনকে। লিবিয়া এবং ইতালীতে অভিবাসী হতে যাওয়া শত শত বাংলাদেশী বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনে আহত, নিহত ও চিরতরে নিখোঁজ হয়েছেন। এ সকল ঘটনায় ভিকটিমদের আত্মীয় স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ এবং ডিএমপি’র পল্টন ও তেজগাঁও পৃথক থানায় মামলা রুজু হয়।

মানব পাচারের ঘটনায় ভিকটিমদেরকে ভারত, দুবাই, মিশর হয়ে লিবিয়াতে পাচার করার পরিকল্পনা, প্রক্রিয়া করা এবং ক্ষেত্রবিশেষে বিমানবন্দর, ঢাকাকে ব্যবহার করার কারনে মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবি ।
তিনি বলেন, লিবিয়ার বিভিন্ন এস্টেটে কাজ ও লিবিয়া হতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশী দালালরা অন এ্যারাইভাল ও ভিজিট ভিসার মাধ্যমে লোকজনকে লিবিয়ায় পাচার করে। লিবিয়ায় পাচার করে ভিকটিমদের লিবিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে আটক রেখে অমানুষিক শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করে। নির্যাতিত ভিকটিমদের কান্নাকাটি, আকুতি মিনতি করা অডিও অথবা সরাসরি মোবাইলে কথাবার্তা বাংলাদেশে অবস্থানরত তাদের পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজনদেরকে পাঠিয়ে টাকা দাবি করে। ভিকটিমদের বাচাঁতে তার আত্মীয়-স্বজন কোন কোন ক্ষেত্রে ভিটাবাড়ি বিক্রি করে টাকা পাঠায়।

তিনি আরো জানান, লিবিয়ায় নিহত মাদারীপুরের ৭ জনকে বাংলাদেশ হতে লিবিয়াতে আমির হোসেনের কাছে পাচার করেছিল তার ভাই গ্রেপ্তারকৃত আকবর হোসেন। গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গির আলম ঢাকাতে অবস্থান করে নিজস্ব কায়দায় বেনগাজিতে মানব পাচার ছাড়াও স্থানীয় অন্যান্য দালালদের কাছ থেকে প্রাপ্ত পাসপোর্টগুলো স্ক্যান করে সফট কপি দুবাই এবং লিবিয়াতে প্রেরণ করে টুরিস্ট ভিসা, অন অ্যারাইভাল মোয়াফাকা সংগ্রহ করে, বেনগাজিস্থ ক্যাম্পে নির্ধারণ করে। গ্রেপ্তারকৃত সুজন ভিকটিম ইছার উদ্দিন, বিজয় ও মো. সজল দেরকে লিবিয়ায় পাঠায়। ২৮শে মে লিবিয়ায় ট্র্যাজিডিতে ভিকটিম মো. সজল আহত হয়ে লিবিয়ায় এক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। নিখোঁজ মো. বিজয় ও ইছার উদ্দিনের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
গ্রেপ্তারকৃতদেরকে পল্টন থানা ও তেজগাঁও থানায় মানব পাচার ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে রুজুকৃত মামলায় বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কমকর্তা। সূত্রঃ মানবজমিন

সি/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন