দেশের সংবাদ

৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার নির্দেশ

৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার নির্দেশ

৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার নির্দেশ

৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণা করে এক মাসের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া মুজিববর্ষের মধ্যেই দেশের সব জেলা-উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণার নির্দেশ আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত একটি রিটে জারি করা রুলের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি এএম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার রুলসহ এই আদেশ দেন।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ্যপুস্তকে ৭ মার্চের ভাষণের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ কেন দেয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বশির আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

বশির আহমেদ পরে সাংবাদিকদের বলেন, ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস ঘোষণা করে এক মাসের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করে বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই আদেশের ফলে ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হল।

এখন প্রশাসনের কাজ হবে এক মাসের মধ্যে একটি গেজেট জারি করা এবং সেই গেজেটের মাধ্যমে ভবিষ্যতে দিবসটি জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা। পাশাপাশি মুজিববর্ষের মধ্যে দেশের প্রত্যেকটি জেলা-উপজেলা কমপ্লেক্সে রাষ্ট্রীয় খরচে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী এক মাসের মধ্যে এই আদেশ বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

রেসকোর্স ময়দানে একাত্তরের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান ও একই বছরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থান সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার কেএম সফিউল্লাহ ও অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জনস্বার্থে ২০০৯ বছরের ২৫ জুন হাইকোর্টে রিট করেছিলেন।

এর এক বছর পরে দেয়া এ রিটের রায়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের একাত্তর-পরবর্তী স্থাপনা, যেমন- শিশুপার্ক, মহানগর পুলিশের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ, ফুলের মার্কেট সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। আদালত রায়ে এক বা একাধিক কমিটি গঠন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সাতটি স্থান চিহ্নিত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এগুলো হল- ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দেয়া ভাষণের স্থান; ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান; একাত্তর সালের ৩ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদে নির্বাচিত সদস্যদের শপথের স্থান; ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থান; পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের স্থান; ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্থান এবং ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণের স্থান।

এই সাতটি স্থান ছাড়া সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সব ধরনের স্থাপনা অপসারণ করতে বলা হয়েছিল রায়ে। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল। সেসব প্রতিবেদন দেখে আদালত উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বার্থে যা যা করা দরকার আদালত তা করবে। গত ১০ বছরে অন্য কোথাও শিশুপার্ক সরাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। ঢাকায় শিশুদের খেলার জায়গা নেই। আদেশ বাস্তবায়ন না করলে কোর্ট বন্ধ করে দেয়া হোক। শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাষণের স্থানটি চিহ্নিত করার উদ্যোগ ছাড়া কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সরকার।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাস্তবায়ন প্রতিবেদন দিয়েছি আদালতে। সে প্রতিবেদনে দেখা গেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ আদালতের আদেশের বিষয়ে কিছুই জানত না, অন্ধকারে ছিল।

আমি যখন ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেছি তখন এতটুকু বোঝা গেল তারা আদালতের আদেশের বিষয়ে ওয়াকিবহালই নন, তবে এখন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অত্যন্ত আন্তরিক।

আদালতের যে আদেশ আছে সে আদেশ অনুযায়ী যত দ্রুত সম্ভব সব নির্দেশনাই বাস্তবায়ন করবেন আশা করি।’ তিনি বলেন, এ বিষয়টিই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে যে, কেন তারা ২০০৯ সালের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেননি বা কেন নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়েছেন, লিখিতভাবে এক মাসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

২০১৭ সালে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বশির আহমেদের করা রিটে ৭ মার্চকে কেন ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

এছাড়াও একাত্তরের ৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্থানে, যে মঞ্চে ভাষণ দিয়েছিলেন, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ, মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ এবং ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছিল যেস্থানে, সেই স্থানে মঞ্চ পুনঃনির্মাণ কেন করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছিল রুলে। শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদেশ দিলেন হাইকোর্ট।

 

আরও পড়ুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ                                 

কানাডার সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six − two =