প্রবাসের সংবাদ

চ্যানেল এস -এর উপস্থাপকের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী অভিযোগ! ক্ষমা প্রার্থণা

চ্যানেল-এস-এর-উপস্থাপকের-বিরুদ্ধে-বর্ণবাদী-অভিযোগ

চ্যানেল এস-এর উপস্থাপকের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী অভিযোগ! ক্ষমা প্রার্থণা । বৃটেন ভিত্তিক বাংলা- চ্যানেল এস-এর উপস্থাপকের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী অভিযোগ যা ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বিশ্বে। উপস্থাপকের প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থণা। চ্যানেলটি বন্ধঘোষণার দাবি নিয়ে অনলাইনে সিগ্নেচার সংগ্রহ করা হচ্ছে ।

জানা যায়, কোভিড১৯ নিয়ে ৩ মে একটি লাইভ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে উপস্থাপক মোহাম্মদ মাহে ফেরদৌস জলিল একজন লাইভ অনুষ্ঠানে দর্শকের উত্তর দিতে গিয়ে বাংলাদেশি হিন্দু-মুসলমানকে নিয়ে অপ্রত্যাশিত এবং অবিশ্বাস্য বর্ণবাদী মন্তব্য করেন  ‘তিনি একটি উন্মুক্ত পাবলিক শোতে (বাংলা ভাষায়) বলেছিলেন যে বাংলাদেশ থেকে যে মুসলমানরা এই দেশে এসেছিল তারা নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের রক্ত ​​উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে এবং হিন্দুদের রক্ত ​​উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত মুসলমান ক্রেতারা তাদের গ্রাহকদের প্রতারণা করছে।”   মুহূর্তের মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সারা বিশ্বে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়ে ফলে দেখা দেয় বিরূপ প্রতিক্রিয়া।

যদিও উপস্থাপক মোহাম্মদ মাহে ফেরদৌস জলিল সরাসরি সম্প্রচারিত পাবলিক শো-তে এমন মন্তব্য করা ঠিক হয়নি বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়ে পরবর্তীতে আরও একটি ভিডিও চ্যানেল এস থেকে প্রচারিত হয়। সেই ভিডিওতে উপস্থাপক করজোড়ে সেই ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ার পরও প্রবাসীরা চ্যানেলের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী অভিযোগ তুলে অনলাইনে ক্যাম্পেইন চালাচ্ছেন। সংগ্রহ করছেন সিগ্নেচার!

চ্যানেলটি সিলেটিদের কাছে খুব জনপ্রিয় হলেও বিভিন্ন কারণে জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারছে না বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। প্রায়ই কোন না কোন বিষয়ে সমালোচিত হচ্ছে। চ্যানেলটিতে ক্যামেরাপার্সন, সংবাদ পাঠিকা, সংগীত শিল্পীসহ বিভিন্ন বিভাগে    বিভিন্ন ধর্মের মানুষ কর্মরত থাকলেও প্রায়ই কয়েকজন উপস্থাপক চ্যানেলটিকে একটি পক্ষের চ্যানেল হিসেবে দেখাতে চাচ্ছেন। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় চ্যানেলটি জন্ম নিলেও তা বজায় রাখতে পারছে না বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন।  এরা প্রায়ই অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষকে হেয় করতে দ্বিধা করেন না বলে অনেকেই বলেছেন।  প্রতি বছর চ্যারেটির নামে অবিশ্বাস্য পরিমানের অর্থ সংগ্রহ নিয়ে রয়েছে রকমারি অভিমত। ইতোমধ্যে ইংল্যান্ডের কিছু বাংলাদেশি প্রবাসীদের গড়া কয়েকটি চ্যারেটি নিয়ে সাহায্যের নামে ধর্মান্তরিত করাসহ  রকমারি অভিযোগ রয়েছে।

কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে যখন সারা বিশ্ব ক্ষত-বিক্ষত, বিপর্যস্ত, বিধ্বস্ত  তখন কিছু মানুষ, কিছু অসাধু ব্যবসায়ি সুযোগ নিয়ে  সহজসরল মানুষকে জিম্মি রেখে, সাহায্যের নামে, মানুষকে ভুল বুঝিযে টাকার পাহাড় গড়ছে আবার কেউ কেউ ধর্মকে ব্যবহার করে অন্য ধর্মের মানুষকে কটাক্ষ করছে যা কোনক্রমেই  তা মানবিক হতে পারে না। করোনাভাইরাসের এই দুর্যোগে-দুঃসময়ে বিশ্বের সব মানুষ অসহায়, সেখানে ধনী-গরীব, রাজা-প্রজা, ধর্ম-বর্ণ, দেশ-বিদেশ সব অসহায় এই শব্দহীন বিশ্ব যুদ্ধের কাছে। ধর্ম-বিধর্ম কিংবা জাত-বিজাত নিয়ে কোন ধরনের বিতর্ক কিংবা সাম্প্রদায়িক উক্তি কোনক্রমেই কাম্য নয়! আর বিশ্বের শ্রেষ্ঠ দেশে থেকে এসব বিষয় অচিন্তনীয় এবং অপরাধ।

উল্লেখ্য,  কানাডার টরন্টোতে রোজাচলাকালীন মাইকে আজান দেওয়াকে কেন্দ্র করে ব্রাম্পটনের একজন আইনজীবী টুইটারে সমালোচনা করলে সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যবসায়ি-উকিলাতির লাইসেন্সসহ জেলা স্কুলের চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারন করা হয়েছে। আরও কত কিছুযে তার ভাগ্যে রয়েছে তা অনিশ্চিত!

মাহি জলিলের বর্ণবাদী মন্তব্যের নিন্দা রুশনারা আলীর

লন্ডনভিত্তিক বাংলা টেলিভিশন চ্যানেল এস-এর উপস্থাপক মাহি জলিলের হিন্দু সম্প্রদায়কে হেয় করে দেওয়া বর্ণবাদী মন্তব্যের নিন্দা করেছেন পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রিন অ্যান্ড বো আসনের টানা তিনবারের সংসদ সদস্য সিলেটের বিশ্বনাথের মেয়ে রুশনারা আলী।

তিনি এ সম্পর্কিত এক বিবৃতিতে বলেন, ‘শুক্রবার ৮ মে, ২০২০ উপস্থাপক এবং চ্যানেল এস-এর মালিক মাহী ফেরদৌস জলিলের একটি ভিডিও আমার নজরে আসে। সেখানে তিনি হিন্দু সম্প্রদায় সম্পর্কে আক্রমণাত্মক এবং বর্ণবাদী মন্তব্য করেছেন।

‘জলিলের ঘৃণ্য ও নিন্দনীয় মন্তব্যে আমি গভীরভাবে হতবাক হয়েছি। তার ক্ষমা চাওয়া উচিত এবং তিনি যে আপত্তিজনক ও বর্ণবাদী মন্তব্য করেছিলেন তা প্রত্যাহার করা উচিত। আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদেরসহ একটি বিবিধ নির্বাচনী অঞ্চলে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে গর্বিত’ বলেও তিনি বিবৃতিতে উল্লেখ করেন।

অনলাইনে যে পিটিশন ভাইরাল হচ্ছে তা পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো  

‘মোহাম্মদ মাহে ফেরদৌস জলিল একজন দণ্ডিত অপরাধী, যিনি তার সাজা প্রদান করেও চ্যানেল এস টিভিতে ((BSkyB Channel 777).) অনুষ্ঠান উপস্থাপনের সময় জঘন্য বর্ণবাদী মন্তব্য করে জনগণ ও কর্তৃত্বের প্রতি তার সম্পূর্ণ অসম্মান অব্যাহত রেখেছেন।

২০২০ সালের ৩ মে সরাসরি সম্প্রচারিত, প্রোগ্রামটির শিরোনাম ছিল COVID-19, যে সময় মন্তব্যটি করা হয়েছিল তা ১ঘন্টা ৪৫ মিনিট।

তিনি একটি উন্মুক্ত পাবলিক শোতে (বাংলা ভাষায়) বলেছিলেন যে বাংলাদেশ থেকে যে মুসলমানরা এই দেশে এসেছিল তারা নিম্ন বর্ণের হিন্দুদের রক্ত ​​উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে এবং হিন্দুদের রক্ত ​​উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত মুসলমান ক্রেতারা তাদের গ্রাহকদের প্রতারণা করছে।

একটি পাবলিক টিভি প্রোগ্রামে এই জঘন্য জাতিগত আক্রমণ হাজার হাজার বাংলাদেশি এবং ব্রিটিশ বাংলাদেশী heritage ঐতিহ্যের প্রগতিশীল মানুষকে পুরোপুরি হতবাক করেছে।’  

ভিডিওটি দেখতে হলে

https://www.youtube.com/watch?v=QZ2N-cvItpc&t=43s

 

সিবিএনএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন