ফিচার্ড মত-মতান্তর

জন্মাষ্টমীর হেতু ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম বৃত্তান্ত ।। প্রজ্ঞা চৌধুরী প্রাপ্তি 

জন্মাষ্টমীর হেতু ও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম বৃত্তান্ত ।। প্রজ্ঞা চৌধুরী প্রাপ্তি

আজ ভাদ্র মাসের কৃষ্ণ পক্ষের অষ্টমী তিথি। আজ থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালন,সাধুদের পরিত্রাণ সর্বোপরি সমস্ত পাশবিক তথা আসুরিক শক্তিকে বিনাশ করে ধর্ম রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে প্রভু শ্রী নারায়ণ মর্ত্যলোকে শ্রীকৃষ্ণ অবতাররূপে আবির্ভূত হন।

শ্রীমদভগবদগীতায় উল্লেখিত আছে – কৃষ্ণস্তু ভগবান স্বয়ম।অর্থাৎ শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং ভগবান। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অষ্টমী তিথিতে জন্মগ্রহণ করায়  তাঁর জন্মতিথিকে জন্মাষ্টমী আখ্যা দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের সকল হিন্দুধর্মাবলম্বীরা তাদের আরাধ্যদেব শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি অর্থাৎ জন্মাষ্টমী উৎসব অত্যন্ত আড়ম্বরের সাথে উদযাপন করেন। এই দিনটি হিন্দুধর্মের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দিন।

শ্রীকৃষ্ণের জন্মকথা – ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্ম উপাখ্যান  শুরু হয় মথুরা রাজ্য হতে। তখন মথুরার রাজা ছিলেন উগ্রসেন।দিনটি ছিল তাঁর আত্মজা দেবকী ও ভাবী জামাতা বসুদেবের পরিণয় দিবস। বিবাহ সম্পন্ন হলে বিশাল আড়ম্বরের সাথে নবদম্পতির বিদায় অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। পরক্ষনেই রাজা  উগ্রসেনের পুত্র যুবরাজ কংস রথের সারথীকে আদেশ দিলেন, “আমি নিজে রথ চালিয়ে নিজ ভগিনী ও ভগ্নীপতিকে ভগিনীর শ্বশুরালয়ে পৌঁছে দেবো”। এই বলে কংস নিজের হাতে রথের রজ্জু তুলে নিয়ে তাঁদের যাত্রা শুরু করলেন। ইতোমধ্যে তীব্র অশনির সাথে দৈব আকাশবাণী হলো- “কংস দেবকীর অষ্টম গর্ভজাত সন্তানই হবে তোমার মৃত্যুর কারণ”। দৈববাণী শোনা মাত্র কংস দেবকী ও বসুদেবকে মথুরার রাজপ্রাসাদে নিয়ে গিয়ে কারাগারে বন্দী করেন এবং পিতা উগ্রসেন তার প্রতিবাদ জানালে তিনি উগ্রসেনকেও কারাবন্দী করে রাজ্যভার গ্রহন করেন। কারাবন্দী থাকা অবস্থায় একে একে ছয় সন্তানের জননী হন দেবকী। কিন্তু দুষ্ট কংস একে একে তাঁর ছয় সন্তানকে হত্যা করে। দেবকীর সপ্তম  প্রয়াসে গর্ভপাত হয়। পরবর্তীতে জানা যায় দেবকীর অনাগত ( সপ্তম) সন্তানই হলেন বসুদেবের প্রথম স্ত্রী রোহিনীপুত্র বলরাম। দেবকীর  অষ্টম সন্তান দ্বাপরযুগের শ্রেষ্ঠ পুরুষ, যুগাবতার শ্রীকৃষ্ণ। রাতটি ছিল প্রচন্ড ঝড়ঝঞ্ঝার  রাত। ভূমিষ্ঠ হলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। অতঃপর একটি দৈববাণী হয়-” গোকুলে নন্দলালের স্ত্রী যশোদা একটি কন্যা সন্তানের জননী হয়েছেন। আমাকে মা যশোদার পাশে রেখে  সেই শিশুপুত্রীকে এই স্থানে নিয়ে এসো”। সঙ্গে সঙ্গে বসুদেব বাঁধনমুক্ত হলেন।রাজপ্রাসাদের সকলে গভীর মায়ানিদ্রায় আচ্ছন্ন হলেন। বসুদেব সেই প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে সদ্যজাত শিশুপুত্রকে নিয়ে গোকুলে গমন করলেন। সেখানেও সকলে  মায়ানিদ্রায় আচ্ছন্ন । বসুদেব শ্রীকৃষ্ণকে  গোকুলে যশোদার কাছে রেখে তাঁর  শিশুকন্যাকে নিয়ে কংসের কারাগারে ফিরে গেলেন। তারপর যশোদার শিশুকন্যারূপী দেবী যোগমায়া বিশেষ কারণবশত নিজরূপ ধারণ করে স্বর্গে পুনঃগমন করেন। শিশুকৃষ্ণ রক্ষা পেলেন।

তারপর থেকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গোকুলে নন্দলাল ও যশোদার পুত্র হিসেবে বসবাস করতে লাগলেন।

৩০/০৮/২০২১ খ্রিস্টাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন