বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪ম প্রয়াণ দিবসে শ্রদ্ধাঞ্জলি
-বিদ্যুৎ ভৌমিক
১১ জ্যৈষ্ঠ ১৩০৬ বঙ্গাব্দ (২৪ মে ১৮৯৯ খ্রী:) বিদ্রোহী কবি ও আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন । ধূমকেতুর মতোই আবির্ভাব ঘটেছিল বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের। কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বিংশ শতাব্দীর অন্যতম জনপ্রিয় অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও দার্শনিক, সংগীতজ্ঞ, সাংবাদিক, সম্পাদক, রাজনীতিবিদ এবং সৈনিক যিনি নিজের সৃজনশীল সৃষ্টির মধ্য দিয়ে মানবতা ও সাম্যের কথা বলেছেন। বাংলা সাহিত্য ও কাব্যে গৌরবউজ্জল ভূমিকা রাখার পাশাপাশি অসাম্প্রদায়িক ও প্রগতিশীল প্রণোদনার কবি হিসাবে নজরুল ছিলেন খুবই পরিচিত। তিনি ছিলেন ‘বিদ্রোহী কবি’। অগ্নিবীণা হাতে তাঁর প্রবেশ, ধূমকেতুর মতো তাঁর প্রকাশ ও বিকাশ হয়েছিল । তিনি নিজেই লিখেছেন, ‘আমি দুরন্ত বৈশাখী ঝড়।’ কবি কাজী নজরুল ইসলাম যেমন লেখাতে বিদ্রোহী, তেমনই জীবনে – কাজেও “বিদ্রোহী কবি” । পরাধীনতা, সাম্প্রদায়িকতা, অত্যাচার, নিপীড়ন ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার ছিল তাঁর বলিষ্ঠ ও প্রতিবাদী কণ্ঠ। ১৯২২ সালে কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতা প্রকাশিত হয় যা সারা ভারতের সাহিত্য সমাজে খ্যাতিলাভ করে:
মহা–বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।
যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন–রোল আকাশে–বাতাসে ধ্বনিবে না,
অত্যাচারীর খড়ুগ কৃপাণ ভীম রণ, ভূমে রণিবে না–
বিদ্রোহী রণক্লান্ত
আমি সেই দিন হব শান্ত।………………
উপনিবেশিক ও স্বৈরাচারী বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে বিদ্রোহী কবি বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন ।তাঁর কবিতার মূল বিষয়বস্তু ছিল মানুষের ওপর মানুষের অত্যাচার এবং সামাজিক অন্যায়, অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ – দুই বাংলাতেই তাঁর কবিতা ও গান সমানভাবে সমাদৃত ও জনপ্রিয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর কবিতা ও গান মুক্তিযোদ্ধাদের মনে হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রেরণা ও সাহস যুগিয়েছে। তাঁর কবিতা ও গান আমাদের দুস্তর পারাবার পেরিয়ে ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার স্বর্ণদ্বারে পৌঁছে স্বাধীনতা অর্জনেও সহায়তা করেছে ।কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১২ ভাদ্র ১৩৮৩ বঙ্গাব্দ (২৯ আগস্ট ১৯৭৬ খ্রী:) সালে ৭৭ বছর বয়সে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন । বিদ্রোহী কবি, সাম্যের কবি ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৪ প্রয়াণ দিবস স্মরণে কবির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করছি । বিংশ ও একাবিংশ শতাব্দীর পরেও বাংলা সাহিত্য ও বাংগালী মনণৈ ও চিন্তায় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম হয়ে বিরাজ করবে।
বিদ্যুৎ ভৌমিক, লেখক ও কলামিষ্ট, উপদেষ্টা সিবিএনএ, মন্ট্রিয়ল, ক্যানাডা
২৮ আগষ্ট, ২০২০
সিএ/এসএস
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন