ফিচার্ড মত-মতান্তর

পদ্মাসেতু শতাব্দীর সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে, গাইবে বাংলাদেশের জয়গান 

বাংলাদেশের-ভবিষ্যৎ-কি

পদ্মাসেতু শতাব্দীর সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে, গাইবে বাংলাদেশের জয়গান 

দেশের টাকায় দেশের সেতু বাংলাদেশের পদ্মাসেতু। পদ্মাসেতু একটি মাইলষ্টোন, এটি দেশের জন্যে আরো সন্মান, মর্যাদা এনে দেবে। খুলে দেবে নুতন অর্থনৈতিক দিগন্ত। বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেবে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। ধন্যবাদ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং সরকার-কে।

আমি বহুদেশে অনেক সেতু দেখেছি, পদ্মাসেতু দেখিনি, ২৪শে জুন ২০২২ এর উদ্ভোধন, সবার মত আমিও উত্তেজিত, আনন্দিত, গর্বিত। এটি দৃষ্টিনন্দন, আইকনিক, দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান, নিশি অবসানে নুতন সূর্যোদয়। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।

কথায় বলে, ‘এক লক্ষ কথা না হলে নাকি বিয়ে হয়না’, পদ্মাসেতু নিয়ে কত কোটি কথা হয়েছে, পক্ষে-বিপক্ষে কত নিউজ ছাপা হয়েছে তা কেজানে? গুগুল জানাচ্ছে, উদ্বোধনের আগেই পদ্মাসেতু নিয়ে এক কোটি এগারো লাখের বেশি সংবাদ প্রচারিত হয়েছে, যা ঐতিহাসিক ঘটনা।

পদ্মাপাড়ের মানুষ উচ্ছসিত সুন্দর ভবিষ্যতের আশায়। এটি বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। স্বপ্নের পদ্মাসেতু ঋণমুক্ত। এটি শুধু একটি সেতু নয়, এক মহাকাব্য, যে কাব্যের রচয়িতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এ কৃতিত্ব তাঁর। তিনি বলেছেন, ‘এটি শুধু সেতু নয়, প্রকৌশল জগতের বিস্ময়’।

এই সেতু পুরো দেশে ‘বিজয় ডঙ্কা’ বাজিয়ে দিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ এতে আনন্দিত। আমায় একজন বললেন, পৃথিবীতে এমন বহু সেতু আছে, এতে এত আনন্দের কি আছে? আমি বললাম, তা আছে, আমাদের তো নেই? আমাদের হলো, এতেই আমাদের আনন্দ।

একটি কার্টুন দেখছিলাম, সেতুর নীচে ম্যাডাম জিয়া, ফখরুল ও অন্যরা সাঁতার কাটছেন। ফখরুল বলছেন, ‘ম্যাডাম সেতু তো হয়ে গেলো, আমরা কি এখন নৌকা দিয়ে পার হবো? ম্যাডাম বিরক্ত হয়ে ধমক দিয়ে বলেন, ‘চুপ, নৌকাও তো ওদের?।

আনন্দটা সেখানেই, দেশে যাকিছু মহৎ, কল্যাণকর বা এমনকি স্বাধীনতা পর্যন্ত সবই আওয়ামী লীগের অবদান। আমাদের যমুনা বহুমুখী সেতু আছে, সেটিও উদ্ভোধন হয়েছিলো ১৯৯৮ সালে, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ তখন ক্ষমতায় ছিলো।

পদ্মাসেতু’র উদ্বোধনের কষ্টে ম্যাডাম জিয়ার হার্ট এটাক হয়েছে। আমরা তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। সুস্থ হয়ে তিনি উদ্বোধনের সময় উপস্থিত থাকুন। সরকার ম্যাডাম জিয়া ও নোবেল বিজয়ী ডঃ মোহাম্মদ ইউনুসকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিরোধিতা করলেও এ আনন্দযজ্ঞে সবাই অংশীদার থাকুক।

ড: ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা উঠে গেছে, এটিও পদ্মাসেতু’র শুভ-প্রভাব। পদ্মাসেতু নিয়ে যাঁরা সমস্যার কথা ভাবছেন, তাদের বলা যায়, যাঁরা পদ্মাসেতু বানাতে পারেন, তাঁরা সমস্যাও সমাধা করতে পারবেন। যাঁরা ভাবছেন সেতু ভেঙ্গে পড়বে তারা নিরাশ হবেন, প্রযুক্তি এখন অনেক উন্নত, সেতু ভাঙ্গবে না, শতাব্দীর সাক্ষী হয়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকবে।

সেতু নিয়ে একটি গল্প বলি, গল্প নয় সত্যি। সেতুর নাম, ‘মোস্তার শহরের পুরাতন সেতু’, নির্মিত হয় ১৫৬৬ সালে। তৈরী করেছেন টার্কিস বিল্ডার মাষ্টার মিমার হ্জ্রুদিন। সেতুটি উদ্ভোধন পর্যন্ত তিনি মৃত্যু’র প্রহর গুনছিলেন, কারণ ইস্তাম্বুলের সুলতান ঘোষণা করেছিলেন যে, ‘এবার ব্রীজ না টিকলে বিল্ডার মাষ্টারের মুণ্ডচ্ছেদ করা হবে’। প্রথমবার সেতু নির্মাণে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন।

মোস্তার শহরের সেতুটি শুধু টিকেছিলো তা নয়, এটি চার শতাব্দীর বেশি দাঁড়িয়েছিল (১৯৯৩ সালে বসনিয়া যুদ্ধের সময় তা ধ্বংপ্রাপ্ত হয়)। উন্মত্ত পদ্মার বুক চিরে গড়ে ওঠা আমাদের পদ্মাসেতু বহু শতাব্দীকাল ধরে সগৌরবে দাঁড়িয়ে থাকবে এবং গাইবে বাংলাদেশের জয়গান, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’।

শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।

১৯শে জুন ২০২২। [email protected];

 

 


সংবাদটি শেয়ার করুন