ফিচার্ড বিশ্ব

ফিলিস্তিনে যিশুর জন্মশহরে পরাধীন-বিবর্ণ বড়দিন

ফিলিস্তিনে যিশুর জন্মশহরে পরাধীনবিবর্ণ বড়দিন

খ্রিস্ট ধর্মানুসারে মা মেরি ও তার স্বামী যোসেফ তৎকালীন মিসরীয় সাম্রাজ্য থেকে ফিলিস্তিনে যাত্রা করেছিলেন অত্যাচারী রাজার হাত থেকে বাঁচতে। যে জেরুজালেমকে আজ জায়নবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত করা হয়েছে, সেখানে মেরি ও যোসেফ শরণার্থী জীবন বেছে নিয়েছিলেন যিশুর নিরাপদ জন্ম নিশ্চিতে। আজকের পশ্চিমতীরের বেথলেহেমে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন শরণার্থী যিশু। নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদন বলছে, ইসরাইলি আগ্রাসনে রক্তাক্ত ফিলিস্তিনের বেথলেহেমে এবারের বড়দিন আসছে বড়ই বিবর্ণ আর পরাধীনতার বাস্তবতা আকারে।

নেই কোনো সংগীতায়োজন। জ্বলবে না কোনো ক্রিসমাস ট্রি। প্রতি বড়দিনে যেমন বেথলেহেম আলোয় আলোয় ভরে ওঠে, এবার তার কিছুই থাকবে না। এই শহর এখন শোকের মাতম করছে। ইসরাইলি হত্যার শিকার ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির জন্য শোক।

গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ ম্লান করে দিয়েছে যিশুর জন্মশহরের বড়দিনের আয়োজনকে। এর প্রতীকী উপস্থাপনও হয়েছে সেখানকার গির্জায়। প্রতীকীভাবে দেখানো হয়েছে শিশু যিশু একটি ফিলিস্তিনি কুফিয়াহতে মোড়ানো। খড়-কাঠের অস্থায়ী দোলনার বদলে যিশু পড়ে আছেন ভাঙা ইট, পাথর এবং টাইলসের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে। ‘আমরা দেখেছি শিশুদের ধ্বংসস্তূপের নিচে থেকে দিনের পর দিন টেনে আনা হচ্ছে। আমরা এই পরিস্থিতিতে পুরোপুরি ভেঙে পড়েছি’ বলেন ইভানজেলিকাল লুথারান ক্রিসমাস চার্চের যাজক মুনথার আইজ্যাক। তিনিই যিশুর এই প্রতীকী উপস্থাপনা করেছেন। নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ‘ঈশ্বর এখন গাজার ধ্বংসস্তূপের নিচে, এখানেই আমরা এখন ঈশ্বরকে খুঁজে পাই।’

যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ৭ অক্টোবর। ইসরাইলে হামাসের অতর্কিত আক্রমণে প্রায় ১ হাজার ২০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। এখন সংঘাত তৃতীয় মাসে প্রবেশ করেছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের মতে, গাজার ২.২ মিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকই শিশু এবং নিহতদের প্রায় ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু। মন্ত্রণালয় বলছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। গাজা বেথলেহেম থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে হলেও যিশুর জন্মশহরে থাকা ফিলিস্তিনিরা তীব্রভাবে গাজাকে অনুভব করে। সে কারণেই এবারের বড়দিন সেখানে ম্লান।

গত মাসে জেরুজালেমের বিভিন্ন চার্চের কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতিতে উৎসবে অপ্রয়োজনীয় ক্রিয়াকলাপ না করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। বেথলেহেমে সাধারণত শহরের কেন্দ্রস্থলে ম্যাঙ্গার স্কোয়ারের একটি মঞ্চে বিশাল ক্রিসমাস ট্রি স্থাপন করা হয়। সেখানে ধুমধাম করে আলোকসজ্জাও হয়। তবে এ বছর কিছুই হচ্ছে না।

এবার আমরা সংগীতের আয়োজন করছি না, গির্জার বাইরে কোনো সজ্জাও করব না, নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন সেখানকার একজন যাজক।

সূত্র: সময়ের আলো


CBNA24  রকমারি সংবাদের সমাহার দেখতে হলে
আমাদের ফেসবুক পেজে ভিজিট করতে ক্লিক করুন।
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ভিজিট করতে পোস্ট করুন।

সংবাদটি শেয়ার করুন