প্রবাসের সংবাদ

বিস্ময় বালক সুবর্ণকে নিউইয়র্ক গভর্নরের সর্বোচ্চ সম্মান

সুবর্ণ আইজ্যাক বারী

বিস্ময় বালক সুবর্ণকে নিউইয়র্ক গভর্নরের সর্বোচ্চ সম্মান

মাত্র সাড়ে ৮ বছর বয়সে ‘বিজ্ঞানী’ খেতাব পাওয়া সুবর্ণ আইজ্যাক বারী নিউইয়র্ক স্টেট গভর্নরের কাছ থেকে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মান পেয়েছেন। তিনি এই জাতীয় স্বীকৃতি প্রাপ্ত প্রথম বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বালক। গত ১৭ অক্টোবর তাকে রাজ্যের এই সর্বোচ্চ সম্মাননা দেওয়া হয়।

জানা যায়, সুবর্ণের বাবা রাশীদুল বারী তার বাবা ডা. মোহাম্মদউদ্দিনকে নিয়ে সিটির ব্রোনব্রিজের সেইফ মেডিকেলে অপেক্ষা করছিলেন। চিকিৎসক তার বাবার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করার সময় দিয়েছিলেন। হঠাৎ করেই বারী তার স্ত্রীর ফোন পেলেন। সুবর্ণের মা ফোনের ওপার থেকে কাঁদছিলেন। রাশিদুল বারী ভেবেছিলেন খারাপ কিছু ঘটেছে।

সুবর্নের মা বললেন, একটি সুসংবাদের কারণে তিনি কাঁদছেন। তিনি জানালেন, “কিছুক্ষণ আগে নিউইয়র্কের স্টেট গভর্নর এ্যান্ড্রু ক্যুমো তার ডেলিগেট আমাদের বাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। তারা সুবর্নকে গভর্ণরের সাথে দেখা করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তারা স্টেট গভর্ণরের স্বীকৃতিপত্র সুবর্ণের কাছে হস্তান্তর করেছেন।”

১৯.৪ মিলিয়ন নিউইয়র্কারের পক্ষে স্বীকৃতিপত্রে গভর্নর লিখেছেন, ‘সুবর্ণ আইজ্যাক বারী,/ গণিত এবং বিজ্ঞানের প্রতি আপনার আবেগের মাধ্যমে টেররিজম মুক্ত একটি বিশ্ব গড়ার জন্য আপনি বিশাল অবদান রেখেছেন। এম্পায়ার স্টেট অন্যকে সাহায্য করার জন্য উৎসর্গকৃত মহান মানুষদের স্বীকৃতি দেয়। আপনি এমন একজন ব্যক্তি যিনি খুব অল্প বয়সেই বিশ্বে ইতিবাচক পার্থক্য তৈরি করেছেন: গণিত এবং পদার্থের বিজ্ঞানের মাধ্যমে, সন্ত্রাস বিরোধী ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে, বইয়ের মাধ্যমে! আপনি বিশ্বজুড়ে চাইল্ড প্রডিজি হিসাবে পরিচিত। গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে আপনার অর্জন প্রশংসার যোগ্য। একজন বিজ্ঞানী হিসাবে বিশ্বের বর্তমান ঘটনা সম্পর্কে আপনার বিস্ময়কর সচেতনতা এবং বিশ্ব শান্তি প্রচারের জন্য সেই সচেতনতা ব্যবহার করার ইচ্ছা আমাকে মুগ্ধ করে। আপনার ভ্রাতৃত্ব, প্রজ্ঞা এবং সহানুভূতির মধ্য দিয়ে আপনি নিজেকে গভীর চরিত্র এবং মূল্যবোধের সিঁড়ি হিসাবে আলাদা করেছেন এবং আপনার কাজের জন্য নিউইয়র্কের পক্ষে আপনাকে সম্মানিত করতে পেরে আমি গর্বিত। আবারও সকল নিউইয়র্কারের পক্ষ থেকে আমি আপনার  প্রশংসা করছি, কারণ ‘দ্য লাভ’ বইয়ের মাধ্যমে আপনি সকল ধর্মের মধ্যে সম্প্রীতি এবং সহনশীলতা জাগানোর ক্ষেত্রে অগ্রগতি এনে দিয়েছেন। অভিনন্দন, এবং অব্যাহত সাফল্য এবং সুখের জন্য শুভকামনা।’

হেনরি কিসিঞ্জার একসময় “তলাবিহীন ঝুড়ি” হিসাবে আমেরিকানদের কাছে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দেয়। অথচ আজ একটি বাঙালি শিশু আমেরিকান শীর্ষ রাজ্য থেকে সর্বোচ্চ স্বীকৃতি পেলেন।

নিউইয়র্কের একটি বাঙালি পরিবারে সুবর্ণের জন্ম ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল। খুব অল্প বয়সেই বিশ্বে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে পিএইচডি স্তরের গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়নের সমস্যাগুলি সমাধান করতে সক্ষম হওয়ার জন্য। তিনি ২০১৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বীকৃতি পেয়েছেন বিজ্ঞানী হিসেবে। নোবেল বিজয়ী কৈলাশ সত্যার্থী তাকে দিল্লিতে “গ্লোবাল চাইল্ড প্রোডিজি অ্যাওয়ার্ড” দেন-  তাও বিজ্ঞানী হিসেবে। মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ভিজিটিং অধ্যাপক হিসাবে নিয়োগ দিয়েছে পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে। সবচেয়ে বড় কথা ২০১৪ সালে নিউইয়র্ক সিটি কলেজের প্রেসিডেন্ট ড. লিসা কোইকো সুবর্ণকে ‘আমাদের সময়ের আইনস্টাইন’ উপাধি দেন।

 

 

সিএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

 

 

সংবাদটি শেয়ার করুন