প্রবাসের সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্র রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিচ্ছে? 

বাংলাদেশের-ভবিষ্যৎ-কি

যুক্তরাষ্ট্র রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিচ্ছে? 

।।শিতাংশু গুহ।। জাতির জনক বন্ধবন্ধু’র খুনি রাশেদ চৌধুরী-কে যুক্তরাষ্ট্র ফেরত দিচ্ছে? কানাঘুষা তাই বলছে। জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে ‘রাজনৌতিক আশ্রয়’ আবেদন করার সময় তিনি ‘মিথ্যা’র’ আশ্রয় নিয়েছিলেন, সেই অজুহাতে তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল হচ্ছে, এবং তাঁকে ‘কান্ট্রি অফ অরিজিন’ অর্থাৎ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে? তেমনটি হলে নুতন বছরে তা হবে একটি ‘মাইলফলক’।

এমনটি ঘটলে অনেকেই কৃতিত্ব দাবি করবেন, বলে রাখা ভালো, এ কৃতিত্ব শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র। আমাদের দূতাবাস আন্তরিক হলে বা চেষ্টা চালিয়ে গেলে এটি আরো অনেক আগেই সম্ভব হতো। বঙ্গবন্ধু’র খুনিদের ফেরত নিতে উৎসাহ শুধুমাত্র শেখ হাসিনা’র, অন্যদের তেমন উৎসাহ কখনোই পরিলক্ষিত হয়নি।

রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেয়ার জন্যে শেখ হাসিনা’র সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সর্বশেষ আর্জি জানিয়েছিলো ১০ই অক্টবর ২০২২। প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ওয়াশিন্টনে তখন যুক্তরাষ্ট্রের ডেপুটি সেক্রেটারি অফ ষ্টেট ওয়েন্ডি আর শেরম্যান-র কাছে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দেয়ার গুরুত্ব বোঝাতে চেষ্টা করেছেন।

এমনিতে রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে আইনগত তেমন বাধা থাকার কথা নয়? যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুদন্ড বৈধ। মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামীকে তাই ফেরত দেয়া সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্র এরআগে মহিউদ্দিনকে ফেরত দিয়েছে এবং বাংলাদেশ তাঁর দন্ড কার্যকর করেছে। রাশেদ চৌধুরী সম্পর্কিত ‘কানাঘুষা’ সত্য প্রমাণিত করতে কূটনৈতিক মহলে প্রচেষ্টা জোরদার হওয়া দরকার।

শেখ হাসিনা’র সদিচ্ছায় বঙ্গবন্ধু’র বিচারটি সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত দণ্ডিত ৩খুনি কোথায় আছেন, তা কেউ জানেনা, যা দু:খজনক। এঁরা হচ্ছেন, খন্দকার আব্দুর রশিদ, শরিফুল ইসলাম ডালিম এবং মোসলেমউদ্দিন। দণ্ডিত ১২জনের মধ্যে ৬জনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে, আজিজ পাশা পলাতক অবস্থায় ২০০১-এ জিম্বাবীতে মারা গেছেন।

বাকি ৫জনের মধ্যে ৩জন পলাতক। ১জন কানাডায়, ১জন আমেরিকায়। আমরা যাঁরা সেদিন প্রত্যুষে রেডিওতে শুনেছিলাম, ‘আমি মেজর ডালিম বলছি’-তাঁরা এখনো অবাক হচ্ছি, ডালিম এখনো পলাতক? তাঁর দন্ড কার্যকর করা যায়নি? এটিও তো সত্য যে, আমাদের দেশের বিচারক বঙ্গবন্ধু হত্যার মত একটি জঘন্য হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে ‘বিব্রত’ হয়েছিলেন?

দণ্ডিত ৫জন আর্মী অফিসার, সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, মুহিউদ্দীন আহমদ, বজলুল হুদা, এবং একেএম মহিউদ্দিন আহমদ’র ফাঁসি কার্যকর করা হয়, ২৭শে জানুয়ারি ২০১০-এ। অপর দণ্ডিত খুনি আবদুল মাজেদ-র ফাঁসি দেয়া হয় ১২ এপ্রিল ২০২০, মিরপুর থেকে ধরার ৫দিন পর, তিনি ভারত থেকে এসেছিলেন।

কানাডায় বসবাসরত নূর চৌধুরীকে ফেরত দেয়ার বিষয়টি আলোচনায় আসে সর্বশেষ ১লা নভেম্বর ২০২২। কানাডা’র নূর চৌধুরীর ব্যাপারটি ভিন্ন, সেখানে মৃত্যুদন্ড নেই, সেই অজুহাতে কানাডা ফেরত দিতে চাচ্ছেনা বলে আমাদের বোঝানো হচ্ছে? যুক্তরাষ্ট্রের কোন দণ্ডিত খুনিকে কি কানাডা ফেরত দিতো না? অবশ্য দিতো, বিষয়টি হচ্ছে, ‘লবিং’। এ কাজটি দূতাবাসের।

আমাদের দূতাবাসগুলো লবিং-এ যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখাতে পারছে না, অথবা সদিচ্ছার অভাব। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বললে ‘লোকে হাসে’। বাস্তবতা হচ্ছে, আমেরিকায় বিএনপি-জামাতের লবিং শক্তিশালী। ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশের এন্টি-ইন্ডিয়ান, এন্টি শেখ হাসিনা  লবি একজোট। এদের সম্মিলিত দীর্ঘ প্রচেষ্টায় এঁরা ‘ৱ্যাব’র ক’জনা’র বিরুদ্ধে ‘স্যাংশন’ আনতে সক্ষম হয়েছে।  [email protected];



সংবাদটি শেয়ার করুন