দেশের সংবাদ

রহস্যজনক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় কে এই ববি হাজ্জাজ?

রহস্যজনক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় কে এই ববি হাজ্জাজ?

 

রহস্যজনক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় কে এই ববি হাজ্জাজ? তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাস বিশ্লেষণ করে বলা যায়, তিনি রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতায় জড়িত। ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু রাষ্ট্র। অথচ ববি হাজ্জাজ তাঁর ফেসবুকে ভারতের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক অবনতি হওয়ার মতো একাধিক উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। উসকে দিচ্ছেন দেশের মানুষকে। নাম তাঁর ববি হাজ্জাজ।

কে এই ববি হাজ্জাজ? একসময় নিজেকে পরিচয় দিতেন এরশাদের বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে, যদিও জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্রে এ ধরনের কোনো পদই নেই। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে হঠাৎ করে হয়ে ওঠেন এরশাদের স্বঘোষিত মুখপাত্র।

ম্যাট্রিকুলেশন সার্টিফিকেট অনুসারে ববি হাজ্জাজের বাবার নাম এ ডি এম মুসা। এই মুসাকে সারা দেশের মানুষ যাকে চেনে মুসা বিন শমসের নামে। তবে এলাকায় তিনি নুলা মুসা নামেই পরিচিত। আদি নিবাস ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার কাজিকান্দা গ্রামে।

জন্ম আ.লীগবিরোধী পরিবারে

বাবার দিক থেকে ববি হাজ্জাজ মননে-মগজে আওয়ামী লীগবিরোধী পরিবারের সন্তান। তাঁর বাবা তথাকথিত প্রিন্স মুসা বিন শমসের একজন কুখ্যাত রাজাকার। নিজ জেলা ফরিদপুরের মানুষ যাঁকে চেনে রাজাকার নুলা মুসা হিসেবে।

একাত্তরে ফরিদপুর শহরে পাকিস্তানি মেজর আকরাম কোরাইশীর সহযোগী মুসা ফরিদপুর থেকে পালিয়ে যান দেশ স্বাধীন হওয়ার পর। জিয়াউর রহমানের সামরিক শাসনের প্রথম দিকে সৌদি আরবে জনশক্তি রপ্তানি করে বেশ ফুলে-ফেঁপে ওঠেন মুসা। এরশাদের সেনা শাসন জারি হলে ভয়ে দেশ ছাড়েন। বছর তিনেক পর লন্ডনে এরশাদের সঙ্গে সমঝোতা হয় মুসার। এরপর দেশে ফিরে এরশাদের ঘনিষ্ঠজনে পরিণত হন। এরশাদের পতনের পরও মুসার সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা থেকেই যায়। বাবার সঙ্গে এরশাদের ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরেই ববি হাজ্জাজও এরশাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। এটা ২০০৯ সালের ঘটনা।

 

বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে গলা মেলানো

শেখ হাসিনার সরকার ও দেশকে অস্থিতিশীল করতে তাঁর ছেলে ‘অভিযান’ শুরু করেন ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় থেকে। ৫ জানুয়ারির ওই নির্বাচন ছিল শেখ হাসিনার জন্য এক মরণপণ লড়াই। ওই নির্বাচন সম্পন্ন করতে না পারলে হয়তো আওয়ামী লীগের অস্তিত্বই হুমকির মুখে পড়ে যেত। সে সময় নির্বাচন বর্জন করে একযোগে বিএনপি-জামায়াত শিবির মাঠে নামে নির্বাচন প্রতিহত করতে। দেশে শুরু হয় আগুন সন্ত্রাস, পেট্রলবোমা। জীবন যায় নিরপরাধ কয়েক শ মানুষের। সে সময় বিএনপি-জামায়াত শিবিরের সঙ্গে কণ্ঠ মেলান রাজাকারপুত্র ববি হাজ্জাজ। লন্ডনে গিয়ে একের পর এক বিবৃতি দিতে থাকেন শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। লন্ডনে বসে গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন, নির্বাচনে অংশ নিতে চান না বলে এরশাদকে সরকার জোর করে সিএমএইচে ভর্তি করে রেখেছে। অভিযোগ করেন তাঁকে জোর করে দেশ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। সে সময় দেওয়া তাঁর সব বক্তব্যই ছিল

মিথ্যা। শুধু শেখ হাসিনার সরকারকে আন্তর্জাতিকভাবে বিপাকে ফেলতে ওই সব বিবৃতি দেন ববি হাজ্জাজ। তাঁর বক্তব্য যে মিথ্যা ছিল তার প্রমাণ, এরশাদ ওই নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন।

দেশ ও শেখ হাসিনার সরকারকে অস্থিতিশীল করতে এখনো সক্রিয় ববি হাজ্জাজ। ফেসবুকে নানা ধরনের উসকানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়েই চলেছেন তিনি। এমনকি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যু নিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষিকা জঘন্যতম স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ববি হাজ্জাজ ওই শিক্ষিক্ষার পক্ষে নিজের অবস্থান জানান দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। এতে ববি হাজ্জাজের ওপর ক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও দেশের সচেতন মানুষ।

 

এরশাদকে বোকা বানালেন ববি

একসময় এরশাদের নিকটজন হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, সুইস ব্যাংকে সাবেক প্রেসিডেন্ট এরশাদের কিছু অর্থ জমা ছিল। ববি হাজ্জাজ এরশাদের কাছে গল্প ফাঁদেন, তাঁর বাবা মুসা বিন শমসেরেরও সুইস ব্যাংকে টাকা রয়েছে। এরশাদ চাইলে ববি সে অর্থ উদ্ধার করে দিতে পারবেন। ববির এ গল্পে মজে যান এরশাদ। জাতীয় পার্টিতে বিশেষ উপদেষ্টার পদ না থাকলেও এরশাদ ববি হাজ্জাজকে বিশেষ উপদেষ্টা হিসেবে ঘোষণা দেন।

এ সময় এইচ এম এরশাদকে পটিয়ে ববি হাজ্জাজ জাতীয় পার্টির জন্য একটি গবেষণা সেল তৈরি করেন। নাম দেওয়া হয় ‘রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক উইং’। গুলশান-২-এর ১১৩ নম্বর সড়কে অফিস নেন। জাতীয় পার্টির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই অফিসের ১৫ জন কর্মীকে পরিচালনা বাবদ ববি হাজ্জাজ এরশাদের কাছ থেকে ১২ লাখ টাকা নিতেন এবং কম্পিউটার ও অফিস সাজানো বাবদ এককালীন নিয়েছিলেন ৫০ লাখ টাকা। জাতীয় পার্টির একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে ওই গবেষণা সেলের কম্পিউটারগুলো অফিসে নিয়ে আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি। কোনো কম্পিউটারেই গবেষণামূলক কিছু পাওয়া যায়নি। তাঁর গবেষণা অফিসের সব কর্মীই ছিলেন সুন্দরী নারী। ওই সুন্দরীদের নিয়েই ছিল তাঁর কায়কারবার।’

 

দুই দিকই খুশি রাখতে ‘জয় বাংলাদেশ’!

২০১৪ সালের নির্বাচন ঘনিয়ে এলে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে রাজি হয়নি। ওই সময় জাতীয় পার্টির একাংশ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়। রাজনীতির এ টালমাটাল অবস্থায় ববি হাজ্জাজ নিজেকে এরশাদের মূখপাত্র দাবি করে নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার বিবৃতি দিতে থাকেন। এ পর্যায়ে তিনি দেশ ছেড়ে সপরিবারে লন্ডন চলে যান এবং লন্ডনে বসে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাতে থাকেন। ২০১৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর লন্ডনে বসে ববি হাজ্জাজ বাংলাদেশের এসএ টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এরশাদ নির্বাচনে যেতে রাজি হননি বলে তাঁকে জোর করে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমিও স্বেচ্ছায় দেশ ছাড়িনি।’ ওই সময় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চাউর ছিল, মূলত তারেক জিয়ার সঙ্গে এরশাদের সমঝোতা করে দেওয়ার জন্যই তিনি লন্ডনে গিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মূলত রওশন এরশাদের আগ্রহে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়। তখন থেকে ববি হাজ্জাজের সঙ্গে জাতীয় পার্টি ও এরশাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সরকারের রোষানলে পড়েও সরকারি দলের এক নেতার আত্মীয় বলে সহজে দেশে ফেরেন ববি হাজ্জাজ। দেশে ফিরে তিনি একটি রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেন। দলের নাম দেন ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন’ (এনডিএম)। নিজেকে পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। পার্টির প্রধান স্লোগান নির্ধারণ করেন ‘জয় বাংলাদেশ’। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির চিরপ্রতিপক্ষ বিএনপি ও আওয়ামী লীগ—দুই দিককেই খুশি রাখেন, যাতে পরে যেকোনো দিকে শামিল হতে পারেন। বিএনপির ‘জাতীয়তাবাদী’ শব্দকে দলের নামের সঙ্গে জুড়ে দেন, আবার স্লোগানের সঙ্গে ‘জয়’ শব্দটিও রাখেন, যাতে আওয়ামী লীগকে খুশি করা যায়।

 

যেভাবে ববি হাজ্জাজ ভারতবিরোধী

২০১৫ সালে ববি হাজ্জাজ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হওয়ার জন্য আবেদন করেন। জাপা তাঁকে মনোনয়ন না নিয়ে মনোনয়ন দেয় বাহাউদ্দিন বাবুলকে। ববি হাজ্জাজ স্বতন্ত্র নির্বাচন করার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে পরে প্রত্যাহার করে নেন এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে চূড়ান্তভাবে সম্পর্ক ছেদ করেন। ২০১৭ সালে ববি হাজ্জাজ নিজ দলের নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে আবেদন করেন। নির্বাচন কমিশন ( ইসি) তাঁর আবেদন নামঞ্জুর করলে তিনি উচ্চ আদালতে যান। আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেওয়ায় ২০১৯ সালের ২৯ জুন ইসি এনডিএমকে নিবন্ধন দেয়। এর মধ্যে ২০১৯ সালের নির্বাচন চলে আসে। নির্বাচনে অংশ নিতে ববি হাজ্জাজ একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করেন। ২০১৮ সালের ২৩ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একাত্তরের পরাজিত শক্তি মুসলিম লীগের সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্যের ঘোষণা দেন। সাম্প্রদায়িক শক্তি মুসলিম লীগের সঙ্গে ঐক্য করার পর তিনি ভারতবিরোধী হয়ে ওঠেন। ২০১৯ সালের ২১ ডিসেম্বর তাঁর দলের পক্ষ থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের ব্যানারে লেখা ছিল—‘ভারত হতে সাবধান, গর্জে ওঠো মুসলমান’। এর কয়েক দিন পর ববি হাজ্জাজ চট্টগ্রামে ‘ভারত সীমান্ত অভিমুখী যাত্রা’ করার একটি প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য দেন।

 

দিচ্ছেন উসকানিমূলক পোস্ট

ববি হাজ্জাজের ফেসবুক ঘেঁটে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে তিনি ঢালাও ও অশ্লীলভাবে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ ও মন্ত্রীদের সমালোচনা করেছেন উসকানিমূলক কথা লিখেছেন। সদ্যঃপ্রয়াত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম জাতীয় নেতা ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ছেলে। মোহাম্মদ নাসিমের নামের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ গোটা দেশের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর আবেগ জড়িত। মোহাম্মাদ নাসিমের মৃত্যুর পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা সিরাজাম মুনিরা একটি ব্যঙ্গাত্মক স্ট্যাটাস দিয়েছেন, যা নিয়ে সারা দেশে তোলপাড় চলছে। গোটা দেশের মানুষ যখন সিরাজাম মুনিরার ব্যঙ্গাত্মক বক্তব্যকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে, সে সময় ববি হাজ্জাজ সিরাজাম মুনিরার পক্ষ নিয়ে তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘তাঁর এই নেতিবাচক কথা লিখবার জন্য পুলিশ প্রশাসন আদালতের কাছে তাঁর রিমান্ড আবেদন জানিয়েছে—এটা আরো বেশি দুঃখজনক এবং সুস্থ গণতেন্ত্রর জন্য ক্ষতিকর।’ দীর্ঘ লেখায় ববি হাজ্জাজ সংবিধানের অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে সিরাজাম মুনিরার লেখার স্বাধীনতা চেয়েছেন। এ ছাড়া গত ১ এপ্রিল ববি হাজ্জাজ তাঁর ফেসবুকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদ ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘কেন অজ্ঞ লোকেরা আত্মবিশ্বাসের সাথে কথা বলতে পারে।’ ২৫ মার্চ তিনি নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন, ‘ভোট চোর এখন তোমাদের সঠিক কিছু করার সময়।’ সংসদে বাজেট পেশের পর গত ১৩ জুন ববি হাজ্জাজ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালকে ব্যঙ্গ করে লিখেছেন, ‘আমাদের মাননীয় অর্থমন্ত্রীর জীবনী সম্বন্ধে আমার তেমন ধারণা নাই। আমি আসলেই জানি না উনি কি সৎ না অসৎ উপায়ে উনার ব্যবসা শুরু করেছিলেন।’ ববি হাজ্জাজ বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুকেও ছাড়েননি। গত ১০ জুন নসরুল হামিদ বিপুর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘এখন তো চাপ দিয়ে ভর্তা বানিয়ে ফেলবেন মনে হচ্ছে।’ একই লেখায় তিনি প্রতিমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘১৭ কোটি জনগণ তো আপনার মতো রিহ্যাবের সভাপতি ছিল না।’ ১২ জুন ববি হাজ্জাজ বাজেট নিয়ে তাঁর ফেসবুক স্ট্যাটাসে ক্ষমতাসীন দলকে আক্রমণ করে লিখেছেন, ‘সরকারি দলের অনুসারী অনেক বড় বড় রাঘব বোয়াল আছেন যাঁরা এতে লাভবান হতে পারেন।’ তিনি বাজেটে কালো টাকার বিরুদ্ধে বলছেন, এটা যেন কাচের ঘরে বসে অন্যকে ঢিল মারার শামিল। যাঁর বাবার কালো টাকার তদন্ত চলছে দুদকে। তিনি কথা বলেন কালো টাকা সাদা করার বিরুদ্ধে।

শেখ হাসিনা যে সময় নিজ দলের সামান্য চাল আত্মসাৎকারী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছেন না, গ্রেপ্তার করে জেলে পুরছেন, ছাড় দেননি সম্রাটদের মতো রাজনৈতিক কর্মীদের, গোটা দুনিয়ায় শেখ হাসিনার পরিচয় একজন সৎ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে, সে সময় ববি হাজ্জাজ শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে ৯ জুন তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সরকারি দলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের যোগসাজশ ছাড়া এই দেশে এত বড় আকারের দুর্নীতি সম্ভব না, আর এরা তো সরাসরি সংসদেই পা দিয়ে রেখেছে। নৌকার মাঝিরাই নৌকা ডুবাচ্ছে।’ সরকারের উচ্চ পর্যায় মানে তো স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। তাহলে ববি হাজ্জাজ কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুর্নীতিবাজ বলতে চান? তিনি কি শেখ হাসিনার দুর্নীতির প্রমাণ দিতে পারবেন? এ প্রশ্ন এখন অনেকেরই। এ ছাড়া স্ট্যাটাসে ববি হাজ্জাজ আমাদের মহান জাতীয় সংসদের সব সদস্যকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করেছেন। তাঁর এমন বক্তব্য তো রীতিমতো রাষ্ট্রের সঙ্গে বিদ্রোহ করার শামিল।

২৪ মার্চ ববি হাজ্জাজ ফেসবুকে তরুণ প্রজন্মের রাজনীতির সৎ ও সজ্জন মানুষ বলে পরিচিত খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহ্মুদের ছবি দিয়ে নসিহত করেছেন করোনা নিয়ে ভুল তথ্য না ছড়ানোর জন্য। একই স্ট্যাটাসে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কর্মে সততা ফিরিয়ে আনতে হবে।’ তাহলে কি তিনি বলতে চান—স্বাস্থ্যমন্ত্রী দুর্নীতিবাজ? কী প্রমাণ রয়েছে তাঁর কাছে? ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ববি হাজ্জাজ ফেসবুকে ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘আমাদের গুণবর্ত সরকারের পুকুর চুরি।’ আরো লিখেছেন, ‘এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই।’ নিজেকে একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারম্যান পরিচয় দেওয়া কোনো ব্যক্তি কি এমন ঢালাওভাবে একটি সরকারের সমালোচনা করতে পারেন? এমন সরকারদ্রোহ, রাষ্ট্রদ্রোহ কী করে সম্ভব? ফেসবুকে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে এমন নির্লজ্জভাবে সরকারের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিকদের বিরুদ্ধে অপমানজনক স্ট্যাটাস দেওয়া কী করে সম্ভব? সাধারণ মানুষ এমন প্রশ্ন তুলে সরকারের সাইবার ক্রাইম বিভাগের রহস্যজনক নীরবতার রহস্য জানতে চাইছে।

সূত্রঃ কালের কন্ঠ

বাঅ/এমএ


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন