ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

রাবীন্দ্রিক, তিনটি কবিতা ||| সুমিত মোদক

রাবীন্দ্রিক, তিনটি কবিতা ||| সুমিত মোদক


 এক সংস্কৃতির নাম
পঁচিশে বৈশাখ ,  একটা সকালের নাম ;
যে সকালের আলো মেখে মেখে গেছে 
আমার বাবা ;
আমার মেয়েও মাখছে …
 
বিবর্ণ সময়ের মধ্যে থেকে উঠে আসছে
অসম্ভব সুন্দর মুখ ;
সে মুখ গুলো ছড়িয়ে দিচ্ছে দিকে দিকে
পবিত্র সকল হাসি ;
 
বিকালে ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি শুরু হলে
কে যেন গেয়ে ওঠে রবি ঠাকুরের গান ;
 
বার বার ফিরে যাই মণিপুরে –
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ণ বেদ ব্যাসের কাছে , 
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছে ,
ঋতুপর্ণ ঘোষের কাছে ;
সকলে আমাকে দেখিয়েছেন , চিত্রাঙ্গদা …
এক রাবীন্দ্রিক ঘরানায় ;
 
পঁচিশে বৈশাখ , এক সংস্কৃতির নাম ;
সে নামেই পরিচিত বাংলার রেণু …
সে নামে চিনবে আমাদেরই উত্তর পুরুষ ।
 
 

ছুটি দিলে না

––
রবি ঠাকুর,
সেই কবে ছেলেবেলায়  তোমার কবিতা 
মুখস্থ করেছি –
‘ মা গো , আমায় ছুটি দিতে বল …’
সে দিন কেউ ছুটি দেয়নি ;
মাও …
হয়নি ‘ পড়া পড়া খেলা ‘ ;
এখনও হয় না ,
আমার সন্তানও খেলার সময় পায় না ;
 
অথচ , এখন আঁধার মাদার গাছের তলা ,
কালো হয়ে  থাকে দিঘির জল …
আজও বাগদি বুড়ি চুপ ভরে শাক তোলে ;
 
রবি ঠাকুর ,
রাতের পর রাত জাগছি ,
ঘুমাতে পারি না ;
কেবলই কাটাকুটি খেলায়  উপনিষদ থেকে
তোমারই পংক্তি …
তুমিও তো আমাকে ছুটি দিলে না ।
 
––
 
অলৌকিক এক পুরুষ
মহাজাগতিক সংসার থেকে ধ্বনি ভেসে এলে
জন্ম নেয় শব্দ ;
জন্ম নেয় অমৃতকুম্ভ , পংক্তি …
সে পংক্তি সকল সঙ্গীত হয়ে বাজে ,
বুকের মাঝে ;
 
বাউল আঙ্গিকে কে গেয়ে ওঠে !
কে এগিয়ে চলে সামনে রাঙামাটির ধুলো মাড়িয়ে !
সে কি আমারই ভিতরে জেগে থাকা 
এক কবি !
নাকি অলৌকিক এক পুরুষ !
যে কি না , একের পর এক শব্দ নিয়ে 
এঁকে চলেছে উত্তরণের ছবি ;
 
এই জাগতি সংসার থেকে  একের পর এক গান
রবীন্দ্র সঙ্গীত হয়ে বাজে সময়ে , দুঃসময়ে ।
সংবাদটি শেয়ার করুন