ফিচার্ড মত-মতান্তর

‘লতার মত মেয়েরা জাতির সম্পদ’

বাংলাদেশের-ভবিষ্যৎ-কি

‘লতার মত মেয়েরা জাতির সম্পদ’

শিতাংশু গুহ, শনিবার ২রা এপ্রিল ২০২২।। অভিযোগ গুরুতর। অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ এনেছেন একজন নারী, শিক্ষিকা, রাজধানীর তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক। তিনি কপালে টিপ্ পড়েছিলেন। পুলিশের পোশাক পড়া একজন লোক তাকে যাচ্ছেতাই গালিগালাজ করেছেন, যাওয়ার সময় মহিলার পায়ে বাইক চাপা দিয়েছেন। দৈনিক ভোরের কাগজ হেডিং করেছে, :কপালে টিপ পরায় শিক্ষিকার গায়ে বাইক তুলে দিল পুলিশ’। পত্রিকা জানিয়েছে, প্রভাষক মামলা করেছেন।

প্রভাষক নারীকে ধন্যবাদ। তিনি প্রতিবাদ করেছেন। মেয়েরা প্রতিবাদী হউক, প্রতিবাদ না করলে পুরুষরূপী অমানুষগুলো ‘তেঁতুল হুজুর’ হয়ে উঠবে। প্রভাষক লতা সমাদ্দার বলেছেন, প্রথম থেকে শুরু করে তিনি যে গালি দিয়েছেন, তা মুখে আনা এমনকি স্বামীর সঙ্গে বলতে গেলেও লজ্জা লাগবে। লতা সাহস করে ঐ ব্যক্তির মোটরবাইকের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সাব্বাস, এইনা বাংলার মেয়ে, প্রীতিলতা ওয়াদ্দারের উত্তরসূরী।

ঘটনা রাজধানীর বুকে, ফার্মগেটে, শনিবার ২রা এপ্রিলে। লতা বলেছেন, ‘আমি হেঁটে কলেজের দিকে যাচ্ছিলাম, হুট করে পাশ থেকে মধ্যবয়সী, লম্বা দাড়িওয়ালা একজন ‘টিপ পরছোস কেন’ বলেই বাজে গালি দিলেন। তাকিয়ে দেখলাম তাঁর গায়ে পুলিশের পোশাক। একটি মোটরবাইকের ওপর বসে আছেন’। লতা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এর আগেও রাস্তাঘাটে বাজে কথা শুনতে হয়েছে। কিন্তু পুলিশের পোশাক গায়ে এক ব্যক্তি যখন এ ধরনের আচরণ করলেন, তা সহ্য করার ক্ষমতা ছিল না’।

প্রভাষক লতা পুলিশের মোটর সাইকেলের নম্বরটি রেখেছেন। বুদ্ধি করে একটি ছবি নিয়ে নিলে একদম ‘সোনায় সোহাগা’ হতো। লতা রাস্তার বিপরীতে তিনজন পুলিশের সাথে কথা বলেছেন এবং তাঁরা তাকে সঠিক পরামর্শ দিয়েছে। লতার স্বামী ঢাকা ইউনিভার্সিটির একজন অধ্যাপক। লতার কলেজের সহকর্মীরা এগিয়ে এসেছেন। তাঁরা যথার্থ কাজটি করেছেন, তাদের ধন্যবাদ। আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসেনি। একজন মহিলার পক্ষে এগিয়ে আসা উচিত ছিলো।

লতা ঘটনা মেনে নেয়নি। কলেজে গিয়ে কেঁদেছেন। সাহস করে মামলা করেছেন। এজাহারের কপি ফেইসবুকে এসেছে। এতে দেখা যায় তিনি উচ্চ শিক্ষিত, পিএইচডি হোল্ডার। বাড়ী কোটালীপাড়া গোপালগঞ্জ। বঙ্গবন্ধু’র এলাকার মেয়ে সাহসী হবে তো বটেই, জয়বাংলা। দেশের প্রতিটি নারী এভাবে প্রতিবাদী হলে দেশ এগিয়ে যাবে, মৌলবাদ বিদায় নেবে। কে যেন বলেছেন, ‘আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি শিক্ষিত জাতি দেবো’। লতার মত মেয়েরা জাতির সম্পদ।

একজন শিক্ষিকার লাঞ্ছনার প্রতিবাদে পুরো শিক্ষিক সমাজ এগিয়ে আসা দরকার। একজন নারীর অপমানে নারী সমাজ এগিয়ে আসা উচিত। হোক প্রতিবাদ। বন্ধ হোক ইভ-টিজিং। লতা বলেছেন, পুলিশ চাইলে অভিযুক্তকে ধরতে পারবে। আশা করি পুলিশ ধরবে। একজন পুলিশের জন্যে পুরো পুলিশ বাহিনীর ওপর কলংক হতে দেয়া যায়না। রাজধানীতে সকাল বেলা এমন ঘটনা ঘটলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে কি ঘটছে তা ভেবে দেখা দরকার।

অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশ হলে তাঁকে পুলিশ বিভাগীয় এবং রাষ্ট্রীয় আইনের আওতায় আনতে হবে। অভিযুক্ত যদি পুলিশ না হ’ন, তবে তিনি ‘ভুয়া’ পুলিশ, দায়েরকৃত অভিযোগ ছাড়াও তিনি আরো বড় অভিযোগে অভিযুক্ত হবেন। বল এখন পুলিশের কোর্টে। পুলিশ চাইলে পারেনা এমন কাজ নেই? একজন নারী কপালে টিপ্ পড়বেন এতো স্বাভাবিক, পুলিশ তা দেখা টিপন্নী কাটবেন, এটি অস্বাভাবিক। সমস্যা টিপের নয়, মগজের, শিক্ষার। সুবর্ণা মুস্তফা সংসদে এর প্রতিবাদ করেছেন, আমাদের প্রগতিশীলদের তেমন নড়াচড়া দেখা যাচ্ছেনা। # [email protected]





সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন