দেশের সংবাদ ফিচার্ড

৩৭৫ সিসি মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি বাংলাদেশে

৩৭৫-সিসি-মোটরসাইকেল-রেজিস্ট্রেশনের-অনুমতি

সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ মোটরসাইকেলে সিসি বিধিনিষেধ শিথিল করেছে। ৩৭৫ সিসির মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের অনুমতি পাবে। তবে একমাত্র দেশে উৎপাদিত ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন পাবে। আমদানি করা মোটরসাইকেলে এ সুবিধার বাইরে থাকবে।

বুধবার (১১ অক্টোবর) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপসচিব মনিরুল আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ অনুমতি দেওয়া হয়।

ঐ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দেশীয় শিল্পের বিকাশ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ১৬৫ সিসির পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে উৎপাদিত ৩৭৫ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন প্রদান করা যাবে।

এ বিষয়ে উপসচিব মনিরুল আলম বলেছেন, প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। উচ্চ সিসি মোটরসাইকেল দ্রুতগতিতে চলে, অপরাধীরা তা ব্যবহার করে দ্রুত পালিয়ে যাবে- এ ধারণা থেকে মোটরাসাইকেলের সিসি নিয়ন্ত্রণ করেছিল সরকার। যদিও সিসির সঙ্গে মোটরসাইকেলের গতির সম্পর্ক নেই। মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের সিলিন্ডারে জ্বালানি ধারণের জন্য কত ঘন সেন্টিমিটার বা কিউবিক সেন্টিমিটার (সিসি) জায়গা রয়েছে তা নির্দেশ করে। উচ্চ সিসির মোটরসাইকেলে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভালো থাকায় বরং, তা অধিক নিরাপদ।

তিনি বলেন, বহু বছর থেকে দাবি ছিল, উচ্চ সিসির মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া হোক। মোটরসাইকেলের উৎপাদক এবং বিপণনকারী কোম্পানিগুলোও এ দাবিতে কয়েক বছর ধরে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছিল। গত সেপ্টেম্বরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৩৫০ সিসি পর্যন্ত মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

তিনি আরও বলেন, তবে এখনি আসছে না ৩৭৫ সিসির মোটরসাইকেল। আগামী বছরের জুলাই মাসের আগে রয়েল এনফিল্ডের মতো ব্র্যান্ড বাজারে আসছে না। দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইফাদের সঙ্গে যৌথভাবে বাংলাদেশে মোটরসাইকেল উৎপাদন করবে রয়েল এনফিল্ড। ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে সংস্থাটি। উত্তরা মোটরসের সঙ্গে যৌথভাবে বাজাজও বাংলাদেশে মোটরসাইকেল উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। জাপানের কাওয়াসাকি বাংলাদেশে ব্যবসা সম্প্রসারণে গত বছরের ডিসেম্বরে সিসি সীমা ২৫০ তে উন্নীত করার আবেদন জানায়।

এদিকে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ৩৫০ সিসির উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোটরসাইকেল রাস্তায় চলাচলের অনুমতির আগে দক্ষ চালক তৈরি করে লাইসেন্স দেওয়ার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেছেন। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত কয়েক বছর ধরে আলাপ-আলোচনার পর গত ৭ সেপ্টেম্বর ৩৫০ সিসি (ইঞ্জিন ক্ষমতা) পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মোটরসাইকেলের ইঞ্জিন ক্ষমতা বা সিসি সীমা ৩৫০ পর্যন্ত বাড়ানোর সুপারিশ করে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি)। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে মোটরসাইকেল আমদানি ও প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো।

প্রসঙ্গত, সরকারি হিসাবে বাংলাদেশে বছরে গড়ে চার হাজার মানুষের মৃত্যু হয় সড়ক দুর্ঘটনায়। তাদের বড় অংশের মৃত্যুর কারণ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে সড়কে নিহত ৩৯৪ জনের মধ্যে ১৫১ জনের প্রাণ গেছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়।

সূত্র: বিডি-জার্নাল

অনলাইন ডেস্ক (এফএইচ/বিডি)
সংবাদটি শেয়ার করুন