অবিশ্বাস্য হলেও সত্য

৮ বছর পর ভারত থেকে বাড়ি ফিরলেন ফেলানী


৮ বছর পর ভারত থেকে বাড়ি ফিরলেন ফেলানী

হারিয়ে যাওয়ার ৮ বছর পর ভারত থেকে বাড়ি ফিরে এলেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের খোর্দ্দমালিবাড়ী গ্রামের সাজেদা আক্তার ফেলানী। ফেলানীকে ফিরে পেয়ে খুশি তার পরিবার-পরিজন। গত ৩০ জানুয়ারি দেশে ফেরা ফেলানীকে দেখতে আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীরা দলে দলে ভিড় করছেন তার বাড়িতে।

সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুরের খোর্দ্দমালিবাড়ী গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর মেয়ে সাজেদা আক্তার ফেলানীর শিশু বয়সেই বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের খোর্দ্দমালিবাড়ীর দক্ষিণপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে ফয়জার হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের পর গাইবান্ধা থেকে ফয়জার হোসেন তার পরিবার পরিজন নিয়ে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চলে যান। সেখানে গিয়ে তার স্বামী ফয়জার হোসেন দ্বিতীয় বিয়ের পরই ফেলানীর জীবনে নেমে আসে চরম নির্যাতন এবং আর অবহেলা। একপর্যায়ে স্বামী ফেলানীকে বাবার বাড়িতে রেখে যান। এতে ফেলানী মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। এক পর্যায়ে খোর্দ্দমালিবাড়ি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে স্বামীর কাছে যাওয়ার সময় ২০১৩ সালে ফটিকছড়ি থেকে হারিয়ে যায় ফেলানী। তখন থেকেই তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পায়নি তার পরিবারের লোকজন। এজন্য তার পরিবারের পক্ষ থেকে সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়।

এক পর্যায়ে জানা যায় ফেলানী ভারতে আছেন। ভারতের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে দীর্ঘ ৮ বছর পর ফেলানী তার নিজ বাড়ি গাইবান্ধায় ফিরে আসতে সক্ষম হন। এতে মা তার সন্তানকে পেয়ে যেমন খুশি, তেমনি মা ও পরিবার খুঁজে পেয়ে খুশি হয়েছেন ফেলানী। ফেলানী সদর উপজেলার মৃত সৈয়দ আলী ও গোলভান নেছার মেয়ে।

এ ব্যাপারে ফেলানীর চাচা আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, ২০১৩ সালে স্বামীর নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলানী ভারতে চলে যান। প্রথমে তিন বছর কলকাতায় কারাভোগের পর ২০১৬ সালে জেল থেকে মুক্ত করে ফেলানীকে আশ্রয় দেন সেখানকার একটি মানবাধিকার সংস্থা। এরপরই তাকে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। গাইবান্ধার বিশিষ্ট সমাজকর্মী অধ্যাপক জহুরুল কাইয়ুমের সহযোগিতায় অবশেষে অনেক চেষ্টা আর নানাভাবে যোগাযোগ করে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে দেশে। কিন্তু তার স্বামী সেই থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ খবর নেয়নি।

ফেলানী বলেন, পরিবারকে ফিরে পেয়ে আমি অনেক খুশি। একটাই দুঃখ থেকে গেল, বাবা আজ বেঁচে নেই। বাবা আমাকে দেখতে পারলেন না। বাবার মুখটা দেখা হলো না।

ফেলানীর মা গোলভান নেছা বলেন, তারা মেয়েকে না পেয়ে মানসিক কষ্টে ছিলেন। দীর্ঘদিন পর খুঁজে পেয়ে তার চোখে-মুখে আনন্দ দেখে তিনিও অনেক খুশি। ওর বাবা বেঁচে থাকলে আরও বেশি খুশি হতো।

#সমকাল


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

 

সংবাদটি শেয়ার করুন