ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

গুচ্ছ কবিতা  – বিচিত্র কুমার

গুচ্ছ কবিতা  – বিচিত্র কুমার

চন্দ্রমুখী

আজ থেকে কোটি কোটি বছর আগে যখন চন্দ্রলোকে;
তার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিলো।
সেদিন এক নিস্পাপ মুখশ্রী দেখেছিলাম চাঁদের আলোতে;
যার মায়াবী দুচোখে রঙিন একটা স্বপ্নের  পৃথিবীর স্বপ্নছিলো।
সেই রঙিন স্বপ্নের পৃথিবীতে আমি হারিয়ে গিয়েছিলাম,
সেখান থেকে আর আমি বাস্তব জীবনে ফিরতে পারিনি।

সহস্রকাল পেরিয়ে গেছে তার প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে;
বছরের পর বছর নীল আকাশে ঈদের চাঁদ উঠেছে।
আর আমি দূর থেকে শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে তার মুখটি দেখেছি;
চাঁদের আকর্ষণে তার মনেও প্রেমের জোয়ার ভেসে গেছে।
আমি মহাকালের মতই  দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তাকে দেখে গেছি,
কিছুতেই মনের কথা তার সঙ্গে খুলে বলতে পারিনি।

এই বলতে না পারার যন্ত্রণা বইতে বইতে হঠাৎ যখন;
কোনো এক ঈদের ছুটিতে তার মুখোমুখি হলাম:
ওগো আমার প্রিয় চন্দ্রমুখী।
তখন তার হৃদয় থেকে মিষ্টি একটা প্রেমের গন্ধ পাচ্ছিলাম।
মনে হচ্ছেছিলো স্বর্গসুখের ন্যায় মাতাল করা মিষ্টি একটা আবহাওয়া,
আমি কিছুতেই আর তার দিক থেকে দৃষ্টি ফিরাতে পারিনি।

 

(০২)
ভালোবাসার ভিক্ষুক আমি

এই সুন্দর পৃথিবীতে সব কিছু হয়তো টাকা দিয়ে কিনতে পাওয়া যায়;
শুধু একটা জিনিস কিনতে পাওয়া যায় না সেটা হলো:
কারু মনের পবিত্র ভালোবাসা।
এ ভালোবাসার পাবার জন্য কত মানুষেই না প্রাণ দিয়েছে:
উতলা প্রেমের সাগরে ;
সেটা ইতিহাসের পাতা উল্টোলেই চোখে পড়ে।
ভেসে আসে কত রোমান্টিক প্রেমিক প্রেমিকার মুখ
আর আমি তো সামান্য ভালোবাসার ভিক্ষুক মাত্র।

প্রেমের দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করতে করতে তোমার দ্বারে কতবার গিয়েছি;
শুধু এক বিন্দু ভালবাসা ভিক্ষার আশায়।
তুমি বারবার আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছো শূন্য হাতে,
মনে হয় পৃথিবীতে ভালোবাসার বড্ড অভাব
কেউ হৃদয় থেকে ভালোবাসা ভিক্ষা দেয় না।
আমি তো তোমার কাছে, তোমার শরীর কাম বাসোনা কিছুই চাইনি;
শুধু একবিন্দু পবিত্র ভালোবাসা ভিক্ষা চেয়েছি।

হয়তো যেদিন আমি এই রঙিন পৃথিবী থেকে হারিয়ে যাব;
সেদিন তুমি বুঝবে,
আমাকে ভিক্ষা না দেওয়ার আক্ষেপে তুমি একাকী নীরবে কাঁদবে;
মনে মনে ভাববে ভিক্ষুকটা আর কেনো আসে না,
আমার নামটা ধরে ডাকে না।

এই মায়াবী পৃথিবীর মতো হয়তো তুমিও সেদিন ;
তোমার সবটুকু ভালোবাসা ভিক্ষা দেওয়ার জন্য মন ঠিক করবে:
তার আশাতেই দাঁড়িয়ে থাকবে।
হয়তো আমার মতো এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে চোখের জল
ঘন ঘন মুছবে।

(০৩)
প্রেমের প্রতিদ্বন্দ্বিতা

ভালোবাসার একটি লাল গোলাপ পাবার জন্য:
পৃথিবীর সব প্রেমিকই ব্যাকুল।
কচি পাতার ফাঁকে লুকিয়ে লুকিয়ে গান গায় বুলবুল;
কোকিল ডাকে বনে বনে তুলে প্রেমের সুর,
সুদূর থেকে ভেসে আসে নব বসন্তের সুর,
বুকের ভিতর করে দুরদুর।

কচি ডানায় রঙিন প্রজাপতি ডানা মেলে দূরপ্রান্তর;
হলুদ পরীরা স্বপ্ন সাজায় আকাশের উপর।
ক্লান্ত প্রেমিকেরা খুঁজে পায় না ভালোবাসার ঘর;
কারু কারু স্বপ্ন ভেঙে যায় রোদলা দুপুর।
ইচ্ছে নদী শুকিয়ে যায় স্বপ্নপূরীর দেশে
ইচ্ছে পূরণ হয় না সবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা শেষে।

(০৪)
ভালো থেকো সুখে থেকো

তুমি, ভালো থেকো সুখে থেকো এই প্রার্থনাই করি;
প্রজাপতি ফুল পাখিদের এই কথাটাই বলি।
ওরা শুধু জানতে চায় বলে,তুমি কেমন মানুষ ভাই?
উত্তরেতে আমি বলি,আমি কতটা ভালোবাসি সেটাই বড় কথা?
সে কতটা ভালোবাসলো এই নিয়ে নেই আমার মাথা ব্যথা?
সুদূর থেকে শুনতে পেয়ে কাছে আসে শয়ন প্রেমদেবী
বলে, ধন্য তুমি প্রেমিক ধন্য তোমার সাধন।
উত্তরেতে বলি তখন, আমি স্বাধীন মনের পাখি
যারে আমার ভালো লাগে মনের কথা বলি?
ইচ্ছে মতো একলা পথে চলি-
স্মৃতিপাতায় খোদাই করে লিখি রাখি নাম
তার ভালোবাসার দাম?


বিচিত্র কুমার, খিহালী পশ্চিম পাড়া, আলতাফনগর, দুপচাঁচিয়া, বগুড়া, বাংলাদেশG

এসএস/সিএ

সংবাদটি শেয়ার করুন