কানাডার সংবাদ বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী

আমার বাবার সাথে বঙ্গবন্ধুর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল: ট্রুডো

আমার বাবার সাথে বঙ্গবন্ধুর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল: ট্রুডো

সিবিএনএ অনলাইন ডেস্ক/১৭ মার্চ, ২০২১ । মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ১০দিনের অনুষ্ঠানমালার পর্দা উঠলো। বুধবার (১৭ মার্চ) বিকেলে শুভেচ্ছা বাণী পাঠান কানাডার প্রধান মন্ত্রী জান্টিন ট্রুডো।

বাংলাদেশ নিয়ে স্মৃতিচারণ করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ১৯৮৩ সালে তৎকালীন কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডোর সঙ্গে আমি বাংলাদেশ সফর করেছিলাম। ওই সময়ের বাংলাদেশের সঙ্গে আজকের নতুন বাংলাদেশের অনেক বড় পার্থক্য। কিছুতেই মেলাতে পারছি না। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে।

‘এই সময়ে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, দরিদ্রতা কমেছে, শিক্ষার হার বেড়েছে এবং স্বাস্থ্যসেবার প্রসার ঘটেছে, একইসঙ্গে দেশের জনগণের জন্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।’

বুধবার বিকেলে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে শুরু হয় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর জাতীয় আয়োজন ‘মুজিব চিরন্তন’। এ আয়োজনের প্রথমদিন সবাইকে সুবর্ণজয়ন্তী এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন জাস্টিন ট্রুডো।

তিনি বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের আমূল রূপান্তর হয়েছে এবং এই এগিয়ে চলার পথে কানাডা অংশীদার হিসেবে আছে। কানাডা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে এবং নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন উন্নয়নে সহায়তা করছে। পাশাপাশি শিশু স্বাস্থ্য ও শিক্ষা এবং যুব সম্প্রদায়ের দক্ষতা বাড়াতে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কানাডা।

বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাসের অনন্য অনুসরণীয় নেতা উল্লেখ করে ট্রুডো বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ভবিষ্যতের স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করতে পেরেছেন, কারণ তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতেন জনগণকে। আজকে আমরা এই উৎসব করতে পারছি শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক একটি দেশ গড়ার স্বপ্নের কারণে। এটি সম্ভব হয়েছে দেশের মানুষের প্রতি তার অফুরন্ত ভালোবাসার জন্য। আমার পিতা পিয়েরে ট্রুডোর সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের নিবিড় সম্পর্ক ছিল। ওই সময় থেকে দু’দেশ দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রাখছে।

ভিডিও বার্তায় তিনি কানাডার সাথে বাংলাদেশের বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন এবং বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার আশা প্রকাশ করে বলেন, তার বাবার সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। বঙ্গবন্ধু ১৯৮৩ সালে তার বাবার সাথে বাংলাদেশ সফরের মধুর স্মৃতিচারণ করেন এবং মন্ট্রিয়লের প্যাপিনো আসনের বাংলাদেশি-কানাডিয়ানেরা তাকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছেন, সে জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘আমি সব সময়ই গর্ববোধ করি, আজ থেকে ৫০ বছর আগে বিশ্বের অল্প যে ক’টি দেশ প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, কানাডা তাদের একটি। ’

তার ভিডিও বার্তার শেষ অংশে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ দিন দিন শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য খাতে এগিয়ে যাচ্ছে। ইকনোমিক গ্রোথ, অর্থনীতিতে বাংলাদেশি মেয়েদের এগিয়ে যাওয়া এবং বাংলাদেশ যেভাবে করোনা মোকাবেলায় সাফল্য অনস্বীকার্য।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বক্তব্য রাখেন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বুধবার ঢাকা সফরে আসা মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ।

১০ দিনের ‘মুজিব চিরন্তন’ উদ্বোধনী আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোটবোন শেখ রেহানা, মালদ্বীপের ফার্স্ট লেডি ফাজনা আহমেদ এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।

অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় শুভেচ্ছা জানিয়েছেন কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। এ দিন জাস্টিন ট্রুডোর পাশাপাশি ভিডিও বার্তা দেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইউসিহিদি সুগা। অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত সাংবাদিক মার্ক টালির শুভেচ্ছা বক্তব্যও প্রচার করা হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন