কানাডার সংবাদ ফিচার্ড

কানাডার এক যৌনকর্মী তার পাওনা বুঝে না পেয়ে আদালতে

কানাডার এক যৌনকর্মী তার পাওনা বুঝে না পেয়ে আদালতে

পাওনা বুঝে না পেয়ে আদালতের মুখোমুখি হয়েছেন নোভা স্কশিয়ার একজন যৌনকর্মী। তার দাবি, এ বছর জানুয়ারিতে একজন খদ্দেরের সঙ্গে রাত্রি যাপন করেছেন তিনি। পাওনা পরিশোধ করতে ওই খদ্দের তাকে ব্যাংক কার্ডের পিন নম্বর দিয়ে দেন। কিন্তু যৌনকর্মী ব্যাংকে গিয়ে দেখেন ওই পিন নম্বর কাজ করছে না। ফলে তিনি টাকা তুলতে পারেননি। এতে বুঝতে পারেন তাকে ঠকানো হয়েছে। তাকে তার পাওনা বুঝিয়ে দেননি ওই খদ্দের। এ জন্য আদালতের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি। বলেছেন, তাকে পেমেন্ট না দিয়েই তার কাছ থেকে সার্ভিস নেয়া হয়েছে। তিনি এবং তার আইনজীবী আশা করছেন এর ফলে কানাডায় যৌনকর্ম নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হবে এবং এ বিষয়ক নীতি পরিবর্তন হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সিবিসি নিউজ। রিপোর্টে ওই নারীকে তার নিরাপত্তার কারণে শুধু ‘ব্রোগান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তার দাবি, তিনি মানবপাচারের একটি চক্র থেকে রক্ষা পেয়েছেন। ‘ব্রোগান’ বলেন, কাউকে এত বেশি ‘সার্ভিস’ দেয়া সত্ত্বেও পাওনা বুঝে না পাওয়া খুবই অমানবিক। এটাও হতাশার যে, আমরা খুবই অরক্ষিত।

এর আগেও ‘ব্রোগান’ সার্ভিসের বিনিময়ে পাওনা বুঝে পাননি। এ বিষয়টিকে অন্য কর্মসংস্থানের মতো দেখা উচিত বলে তিনি মনে করেন। যৌনকর্মের জন্য লড়াইয়ের সুযোগকে অন্য ফর্মের মতো দেখা উচিত। তার ভাষায়, যৌনকর্মীদের অধিকারের বিষয়ে আমি খুবই আগ্রহী। তাই যখন আমার ক্ষেত্রে কোনো কিছু ঘটে, আমাকে এর জন্য পাওনা দেয়া হয় না, তখন আমি যেন এ বিষয়ে কিছু করার সুযোগ পাই। অন্যদের দেখাতে চাই যৌনকর্মীদেরও তাদের মতো অধিকার আছে।

কানাডায় যৌনকর্মীদের দেহব্যবসা অনুমোদিত। কিন্তু ২০১৪ সালে পাস হওয়া প্রটেকশন অব কমিউনিটিজ অ্যান্ট এক্সপ্লোইটেড পারসন্স অ্যাক্টের অধীনে কোনো পাবলিক বা উন্মুক্ত স্থানে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, যৌনতার জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া অপরাধ হিসেবে গণ্য। একই সঙ্গে এই ‘সার্ভিস বিক্রি করা’ও অপরাধ হিসেবে গণ্য। এর ফলে যৌনকর্মীরা সহজেই তাদের ‘সার্ভিসের’ জন্য কন্ট্রাক্ট সৃষ্টি করতে সক্ষম নন। একজন যৌনকর্মী এমন ব্যবস্থা করতে পারেন না, যেখানে অবৈধ কর্মকা-ের জন্য সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা যায়। ব্রোগানের প্রতিনিধিত্ব করছেন সোসাইটি অব মেরিল্যান্ড নোভা স্কশিয়ার এলিজাবেথ ফ্রাই সোসাইটির আইনজীবী জেসিকা রোজ। তিনিই এসব তথ্য দিয়েছেন।

জেসিকা রোজ বলেন, কানাডায় অন্য পেশার মানুষের যেমন স্থিতিশীলতা আছে যৌনকর্মীদেরও একই রকম অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকা উচিত। পাওনা পরিশোধের ক্ষেত্রে তারা বাস্তবেই পিছিয়ে আছেন। এই অর্থ পরিশোধ করার কথা তাদের খদ্দেরদের। তিনি আরও বলেন, আইনে যে ধারা আছে তা যৌনকর্মীদেরকে ক্ষতি থেকে সুরক্ষার জন্য। এর মধ্য দিয়ে যৌনকর্মী এবং তার খদ্দেরের মধ্যে আইনগত প্রতিকারের ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে। যৌনকর্মীদের সার্ভিসের বিনিময়ে অর্থ পাওয়াই তার কাছে সবচেয়ে বড় স্বার্থ।

 



সংবাদটি শেয়ার করুন