প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড: পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ড: পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

বাংলাদেশে প্রায় ছয় বছর আগে ঢাকায় বইমেলা চলার সময়ে জঙ্গি হামলায় নিহত ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের মামলায় আদালত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।

এছাড়া, অভিযুক্ত আরও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ এক ট্রাইব্যুনালে আজ এই রায় দেয়া হয়।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্ত হওয়া মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক, তথাকথিত আনসার আল ইসলাম জঙ্গি সংগঠনের সদস্য আকরাম হোসেন, আবু সিদ্দিক সোহেল, মোজাম্মেল হোসেন ও আরাফাত রহমানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে।

অপর অভিযুক্ত শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

দুপুর ১২টা নাগাদ অভিযুক্তদের কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। রায় ঘোষণার সময় আদালত প্রাঙ্গণে বহু মানুষ জড়ো হয়েছিলেন।

আদালতে ভিড়

ছবির ক্যাপশান, | রায় ঘোষণার সময় আদালত চত্বরে ভিড়


মামলায় ছয়জন অভিযুক্ত ছিলেন, যাদের মধ্যে দুইজন মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক ও আকরাম হোসেন পলাতক রয়েছেন।

অভিযুক্তদের সাথে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সম্পৃক্ততা ছিল বলে এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।

রায়ের পর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেছেন রায়ে তারা সন্তুষ্ট। তিনি বলেছেন, “যারা অন্যায় করবে তাদের ক্ষমা নেই, তাদের শাস্তি হতে হবে।”

অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্তদের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেছেন দণ্ডপ্রাপ্তরা আপীল করবেন।

তিনি বলেছেন, যাদের সাক্ষী হিসেবে আনা হয়েছে তাদের সাক্ষ্যর মাধ্যমে দণ্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি বলে তিনি মনে করেন।

তিনি আরো বলেছেন, “শুধু বিভিন্ন তদন্তকারী কর্মকর্তার সাক্ষ্যর ভিত্তিতে এই রায় দেয়া হয়েছে। কোন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য নেয়া হয়নি।”

নজরুল ইসলাম বলেছেন মামলার নথিতে দণ্ডপ্রাপ্তদের সাথে আনসার আল ইসলামের সম্পৃক্ততা দেখাতে পারেনি তদন্তকারীরা।

আব্দুল্লাহ আবু
ছবির ক্যাপশান, |রায়ের পর কথা বলছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আবু।


২০১৫ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলায় স্ত্রীর সাথে বেড়াতে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায়।

মেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির কাছে তার ওপর প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিত হামলা চালানো হয়।

হাসপাতালে নেবার পর সেই রাতেই মারা যান অভিজিৎ রায়। হামলায় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যাও গুরুতর আহত হন।

অভিজিৎ রায় সমমনা কয়েকজন লেখকের সাথে মুক্তমনা নামে লেখালেখির একটি ওয়েবসাইট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি বিজ্ঞান, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, ধর্ম, নাস্তিকতাবাদ ইত্যাদি নিয়ে লেখালেখি করতেন।

তার লেখার বিষয়বস্তুর জন্য ইসলামপন্থীদের দ্বারা বিশেষভাবে সমালোচিত ছিলেন অভিজিৎ রায়।

অভিজিৎ রায়ের বইয়ের প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপন একই বছর জঙ্গি হামলায় নিহত হন। মাত্র গত সপ্তাহেই ফয়সাল আরেফিন দীপনকে হত্যার দায়ে আট জনের ফাঁসির আদেশ হয়েছে। -বিবিসি

সংবাদটি শেয়ার করুন