সাহিত্য ও কবিতা

ঈদের কবিতা : ২০২৩ সালে বাছাইকৃত ১০ টি ঈদের কবিতা ও ছড়া

ঈদের-কবিতা

“রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ”। সবাইকে জানায় ঈদ মোবারক ও ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মানে খুশি, ঈদ বয়ে আনে অনাবিল আনন্দ। সেই খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করতেই কবিরা লেখেন ঈদের কবিতা (Eid Er Kobita)। তাই আপনাদের জন্য নিয়ে এলাম মজার মজার ঈদের কবিতা ।

 

ঈদ খুশি

ঈদ এলো, এলো ঈদ
খুশি খুব মনে,
ঈদ নিয়ে কত কথা
বলি জনে জনে।

মন নাচে প্রাণ নাচে
নানারূপ প্লান,
কিছুতেই দেবো নাকো
হতে সব ম্লান।

মনে কোনো কালি নেই
মনে নেই দাগ,
খুব দূরে চলে গেছে
হৃদয়ের বাঘ।

বুক জুড়ে এসে যায়
ফুরফুরে হাসি,
আজ যেন সকলেরে
খুব ভালোবাসি।


 

ঈদের সংবাদ

রোজা শেষে মিষ্টি হেসে
শাওয়ালের চাঁদ,
রূপোর তশতরীতে বয়ে আনে
ঈদের সংবাদ।

ঘরে ঘরে পিঠা পুলির
হরেক আয়োজন,
ঈদের দিনে বিলিয়ে সব
খুশিতে ভরে মন।

ধনী-গরীব নেই ভেদাভেদ
হিংসা-দ্বেষ দূর,
পরস্পরে বুক মিলিয়ে গড়ে
সম্প্রীতি সুমধুর।

খোকাখুকু খুশবু মেখে
নতুন জামা গায়,
আব্বুর সাথে পড়তে নামাজ,
ঈদগাহেতে যায়।


 

ঈদের আনন্দ
-সাজিয়া আফরিন

রোজার শেষে ঈদের খুশি
খুশির জোয়ার প্রাণে,
মিষ্টি সুরে আকুলতা
বলছে গানে গানে।

নতুন জামা মাথায় টুপি
বাবার হাতটি ধরে,
ঈদের নামাজ করবে আদায়
বলছে মাকে ঘরে।

মায়ের হাতের মিষ্টি খাবার
জিভে যে জল আসে,
পায়েস ফিরনি নকশি পিঠা
গুড়ের সিরকায় ভাসে।

দুঃখ বিভেদ আজকে ভুলে
মিলেমিশে থাকি,
ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি
প্রেম বন্ধনে রাখি।

ইচ্ছে কতো মনের মাঝে
থাকতো যদি ডানা,
দূর পবনে ভেসে যেতাম
শুনতাম না আর মানা।


 

ঈদের আনন্দ
-মোঃ মজিবুর রহমান

ঈদ এলো নতুন করে
বছর গুড়িয়ে,
হাসিখুশি থাকবো মোরা
সবাইকে নিয়ে।

মুখে মুখে মাতামাতি
হয়না তবু বন্ধ,
বন্ধু আর বান্ধব মিলে
থাকবে আনন্দ।

পোলাও খাব, কুরমা খাব
খাব কত কি,
ঈদ গাহে যাব মোরা
কি করে ভূলি।

নতুন কাপর গায়ে দিয়ে
সালাম দিবে সবে,
ছোট ছেলে নামায পড়বে
বলে- আমায় সাথে নেবে।

নামায শেষে কুলাকুলি
কত মানুষ চেনা,
ঈদের আনন্দ কত বেশি
হয়না বেচা-কেনা।

গুরুস্থানে যাব মোরা
একসাথে হায়,
সবার চোখের কান্না দেখে
বুক ভেসে যায়।

আশা কত বুকে আছে
গরুর মাংশ খাব,
পরিবারের ভালোবাসায়
সবার মন রাঙ্গাবো।


 

ঈদের খুশি
-শুভ জিত দত্ত

ওই উঠেছে আকাশে চাঁদ
কালকে খুশির ঈদ।

একটি মাস রোজা‌‍ শেষে
আসে খুশির ঈদ,
নামাজ শেষে কোলাকুলি
বড় ছোট নির্বিশেষে।

নানা রকম আয়োজনে
মেতে থাকি সবাই মিলে।

দুঃখ সুখের ভাগাভাগি
করব সবাই মিলে।

নতুন জামা নতুন জুতা
পড়বো মজা করে।

ঘোড়াঘুড়ি খাওয়া দাওয়া
নাইকো মজার শেষ।

লাচ্ছা সেমাই ফিরনি মিটাই,
নানা রকম আয়োজনে
ঈদ জমে ওঠে।

ভেদাভেদ ভুলে সবাই
আনন্দে মেতে ওঠি,
সরিয়ে যত দুঃখ গুলো।


 

ঈদ মোবারক
– কাজী নজরুল ইসলাম

শত যোজনের কত মরুভূমি পারায়ে গো,
কত বালুচরে কত আঁখি-ধারা ঝরায়ে গো,
বরষের পরে আসিলে ঈদ!

ভুখারীর দ্বারে সওগাত ব’ইয়ে রিজওয়ানের,
কন্টক-বনে আশ্বাস এনে গুল- বাগের,
সাকীরে “জা’মের দিলে তাগিদ!

খুশীর পাপিয়া পিউ পিউ গাহে দিগ্বিদিক
বধূ জাগে আজ নিশীথ-বাসরে নির্নিমিখ!

কোথা ফুলদানী, কাঁদিছে ফুল,
সুদূর প্রবাসে ঘুম নাহি আসে কার সখার,
মনে পড়ে শুধু সোঁদা-সোঁদা বাস এলো খোঁপার,
আকুল কবরী উলঝলুল!

ওগো কাল সাঁঝে দ্বিতীয়া চাঁদের ইশারা কোন
মুজদা এনেছে, সুখে ডগমগ মুকুলী মন!
আশাবরী- সুরে ঝুরে সানাই।

আতর-সুবাসে কাতর হ’ল গো পাথর-দিল,
দিলে দিলে আজ বন্ধকী দেনা-নাই দলিল,
কবুলিয়তের নাই বালাই।।

আজিকে এজিদে হাসেনে হোসেনে গলাগলি,
দোযখে বেহেশতে সুল ও আগুনে ঢলাঢলি,
শিরী ফরহাদে জড়াহড়ি!

সাপিনীর মত বেঁধেছে লায়লী কায়েসে গো,
বাহুর বন্ধে চোখ বুঁজে বঁধু আয়েসে গো,
গালে গালে চুমু গরাগড়ি।।

দাউ- দাউ জ্বলে আজি স্ফূর্তির জাহান্নাম,
শয়তান আজ বেহেশতে বিলায় শরাব-জাম,
দুশম্ন দস্ত এক-জামাত!

আজি আরফাত-ময়দান পাতা গাঁয়ে- গাঁয়ে,
কোলাকুলি করে বাদশা ফকীরে ভায়ে-ভায়ে,
কা’বা ধ’রে নাচে ‘লাত-মানাত’।।

আজি ইসলামী ডঙ্কা গরজে ভরি’ জাহান,
নাই বড় ছোট-সকল মানুষ এক সমান,
রাজা প্রজা নয় কারো কেহ।

কে আমীর তুমি নওয়াব বাদশা বালাখানায়?
সকল কালের কলঙ্ক তুমি; জাগালে হায়
ইসলামে তুমি সন্দেহ।।

ইসলাম বলে, সকলের তরে মোরা সবাই,
সুখ-দুখ সম-ভাগ করে নেব সকলে ভাই,
নাই অধিকার সঞ্চয়ের!

কারো আঁখি-জলে কারো ঝাড়ে কি রে জ্বলিবে দীপ?
দু’জনার হবে বুলন্দ-নসীব, লাখে লাঝে হবে বদ-নসীব?
এ নহে বিধান ইসলামের।

ঈদ-অল-ফিতর আনিয়াছে তাই নববিধান,
ওগো সঞ্চয়ী, উদ্বৃত্ত যা করিবে দান,
ক্ষুধার অন্ন হোক তোমার!

ভোগের পেয়ালা উপচায়ে পড়ে তব হাতে,
তৃষ্ণাতুরের হিসসা আছে ও-পেয়ালাতে,
দিয়া ভোগ কর, বীর দেদার।।

বুক খালি ক’রে আপনারে আজ দাও জাকাত,
করো না হিসাবী, আজি হিসাবের অঙ্কপাত!
একদিন করো ভুল হিসাব।

দিলে দিলে আজ খুন্সুড়ি করে দিললগী,
আজিকে ছায়েলা-লায়েলা-চুমায় লাল যোগী!
জামশেদ বেঁচে চায় শরাব।

পথে পথে আজ হাঁকিব, বন্ধু, ঈদ মোবারক! আসসালাম!
ঠোঁটে ঠোঁটে আজ বিলাব শিরনী ফুল-কালাম!
বিলিয়ে দেওয়ার আজিকে ঈদ!

আমার দানের অনুরাগে-রাঙা ‘ঈদগা’রে!
সকলের হাতে দিয়ে দিয়ে আজ আপনারে-
দেহ নয়, দিল হবে শহীদ।


 

ঈদের সালাম নেবেন
-ইমতিয়াজ সুলতান ইমরান

আজকে সবাই যাচ্ছে ভেসে হাসিখুশির বানে
সবার সাথে আমারও খুব পুলক জাগে প্রাণে।
কী হয়েছে? কী ঘটেছে? কিসের মাতামাতি?
কিসের খুশি? জানতে করে মনটা আতিপাতি!

দিন গড়িয়ে ঘনিয়ে যখন এলো সাঁঝের বেলা
বনবাদাড়ে আলোর জোনাক জমিয়েছে মেলা।
দূর আকাশে চেয়ে আছে পাড়াপড়শি যতো
একটা নাকি চাঁদ উঠেছে কচি শিশুর মতো।

সন্ধ্যা বেলায় চাঁদ দেখিতে মাঠে সবাই এলো
সবার মতো আমার মনে আগ্রহ খুব পেলো।
হঠাৎ দেখি মেঘের ফাঁকে চিকন চাঁদের হাসি
উপর থেকে ঝরছে যেন জোছনা রাশিরাশি।

রমজানের ঐ রোজার শেষে… উঠলো বেজে গীতি
ঈদের মহান, নজরুলের গান… সাম্য সুখের প্রীতি।
বিভেদ ভুলে নিজেকে আজ বিলিয়ে সবাই দেবেন
ঈদ মোবারক! ঈদ মোবারক! ঈদের সালাম নেবেন।


 

ঈদ এসেছে ঈদ
-আশিক মাহমুদ রিয়াদ

পবিত্র রমজান শেষে এলো খুশির ঈদ,
পাখিরা গায় আজ স্নিগ্ধতার গজল
হৃদয়ে বাজে পবিত্রতার গীত
আজ যে খুশির বাধন হারিয়ে,
জড়িয়ে চাঁদর ভালোবাসার
জানাই তোমায় ঈদ মোবারক।

ঈদ এসেছে নিয়ে খুশির বার্তা
গাছে গাছে বসেছে পাখিদের কলরব
রাস্তায় নেমেছে নতুনত্বের ঢাল
আজ ভেদাভেদ ভোলার দিন
এসো করি ঝিলমিল.ভেসে বেড়াই আনন্দে।

বছর ঘুরে এলো খুশির ঈদ
হৃদয়ে বাজে আনন্দের গীত
আকাশে সরু এক ফালি চাঁদ উঠেছে ঐ
ঈদ এসেছে, ঈদ এসেছে, আগামীকাল কই।

সন্ধ্যে রাতে হুরোহরি, হৃদয়ে বাজে কলরব
রাত পেরোলেই ঈদের দিন, হবে কত কি কতসব।
সকাল সকাল ঘুম ভাঙলেই,
ভেসে আসে মসজিদের আজানের ডাক!

গোসল সেরে
নতুন পাঞ্জাবি গায়ে জড়িয়ে
গায়ে মেখে সুগন্ধি
এগোই তবে মসজিদের দিকে
একটু একটু হাসি ফিকে।

আজ সেই দিন এলো
সারাদিন হবে মাতামাতি
ঈদ এলো খুশির বার্তা নিয়ে
ভেঙে দিয়ে সব ভেদাভেদ
হৃদয় থেকে তোমাই জানাই আজ
ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক।


 

ইদ পরানের মেলা
-নিশিকান্ত রায়

মিলেই যাবে রঙ ধনুটা,ভাবছি বসে ঘাটে,
জোয়ার ভাসে জলের শ্বাসে সূর্যি বসে পাটে।
মরুর হাওয়া আলোছায়া, সাগর ভরা গান,
শস্য শ্যামল কোমল ছায়ায় আলোর অভিমান।

ত্যাগ ও ভোগের সুমহিমায় আসে প্রাণের ইদ,
ভুলে যাওয়া সব ভেদাভেদ চোখ জুড়ে নাই নিঁদ।
বাতাস ঘিরে খেলা করে আনন্দেরই গান,
হিংসা ঘৃণা সব চলে যায় সমুদ্দুরের টান।

কাজল দিঘীর অলস জলে খুশীর কাঁপন উঠে,
ইদ এসে তাই ভূবন ভোলায় পাষানে ফুল ফুটে।
ছোট বড় গরীব দুঃখী অবহেলার খেলা,
মন্দ গুলো সব ভুলে যাই ইদ পরানের মেলা।


 

ঈদ ও জীবন
-মজনু মিয়া

আকাশের চাঁদ দেখা মাত্রা আনন্দ ক্ষণ শুরু
কেনাকাটা শুরু আরও আগে থেকে হইছে
কারও আবদার পূরণ করা সম্ভব নয় তো আমার
অভাবের সংসারে জীবন জটিল অসুখ বিসুখ।

পরিবার পরিজন কারও মন জয় করতে পারা
যেন আকাশের চাঁদ ধরা পকেট চুচু করে
চোখ মুখ দেখে মনে হলো জ্বলন্ত অনলে পুড়া
একটা অভাগা লোক পালানো ছাড়া পথ হারা।

কাছের তাকেও বুঝাতে পারছি না জীবন জ্বালা
ব্যর্থ হয়েছি জীবনে বাঁচতে হলে পালা।

ঈদের ছন্দ : ঈদ শুভেচ্ছা বার্তা : ঈদ মোবারক স্ট্যাটাস


CBNA24 অনলাইন ডেস্ক (এফএইচ/বিডি)

আমাদের ফেসবুক পেজ ভিজিট করতে ক্লিক করুন

আমাদের ইউটিউব চ্যানেল ভিজিট করতে ক্লিক করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন