প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

ল্যাটিন আমেরিকার আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশের উজ্জ্বল উপস্থিতি

ল্যাটিন আমেরিকার আন্তর্জাতিক বইমেলায় বাংলাদেশের উজ্জ্বল উপস্থিতি

শেলী জামান খান।।  সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে বড় এবং ৩৭ তম গুয়াদালাহারা আন্তর্জাতিক বইমেলা। মেলার একটি উল্লেখযোগ্য দিক হল, এবারই প্রথমবারের মত বাংলাদেশ এই বইমেলার অংশগ্রহণ করল। এটি ছিল মেক্সিকো সিটির বাংলাদেশ হাই কমিশনের তত্তাবধানে  বাংলাদেশের লেখক এবং তাদের প্রকাশনার প্রথম অংশগ্রহণ।

২৫ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে গুয়াদালাহারা আন্তর্জাতিক এই বইমেলায় বাংলাদেশের স্টলের উদ্বোধন করেন মেক্সিকো সিটির রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম।

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পুতুল, রিক্সা, বর-কনে, গহনা এবং সূচিকর্ম করা, বাংলাদেশী হস্তশিল্পের জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো স্টলটি উপস্থিত দর্শক এবং পাঠকদের মনে বাংলাদেশকে জানার আগ্রহ তৈরি করেছে। উদ্বোধনের পর দূতাবাসের প্রকাশনা “বিউটিফুল বাংলাদেশ” শিরোনামে বাংলাদেশের ঐতিহ্য সম্বলিত একটি  স্বারক উপস্থাপনার মোড়ক উন্মোচন করেন আবিদা ইসলাম।

মেক্সিকোতে খন্ডকালীন বসবাসরত প্রখ্যাত বাংলাদেশী লেখক, অনুবাদক আনিসুজ জামান, কানাডা থেকে আগত কবি ও লেখক মৌ মধুবন্তী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আগত  শেলী জামান খান এবং মেক্সিকো দূতাবাসের কাউন্সেলর শাহানাজ রানুর বইও রাষ্ট্রদূত ইসলাম পর্যায়ক্রমে উদ্বোধন করেন।

অনুবাদক আনিসুজ জামানের বাংলা থেকে স্পেনিশ ভাষায় বইগুলো  অসংখ্য পাঠকের নজর কেড়েছে। আনিসুজ জামানের অনুবাদে প্রখ্যাত লেখক জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের স্পেনিশ অনুবাদ ‘মিল এনোস ডি এসেন্টিমিয়েন্তো’ এবং তার অনুদিত, আন্দ্রেস মুওজ সম্পাদিত ছোট গল্পের বই “কুয়েন্টোস আ ওরিলাস দেল রিও পদ্মা” বা ‘পদ্মা নদীর তীরের গল্প’ বই দুটো অনেক স্পেনিশভাষী পাঠকের  আগ্রহে ছিল। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বই বিক্রিও হয়েছে।

আনিসুজ জামানের বই এর পাশাপাশি স্প্যানিশ প্রকাশনা দ্য পিপলস হিরো, ১০০ পোয়েমস, অসমাপ্ত স্মৃতি, সুন্দর বাংলাদেশ, লেখক আনিসুল হকের মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস মা এবং বাংলাদেশের জাতীয় কবি ‘নজরুলের কবিতা’ পাঠকদের আগ্রহ নিয়ে সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। যা বাংলাদেশী লেখক এবং প্রকাশকদের জন্য আশাব্যান্জক!

বইমেলায় ১২০০ টিরও বেশি স্টল এবং ২৫০০ প্রকাশক প্রায় ৫০ টি দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রায় ১০,০০০ দর্শনার্থী প্রতিদিন মেলায় অংশগ্রহণ করে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করেছে।

গুয়াদালাহারা বইমেলায় অংশগ্রহণ করে নতুন এক অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হল। স্পেনিশ ভাষার দেশে আমাদের মাতৃভাষা বাংলার সগৌরব উপস্থিতি দেখে, নিজে উপস্থিত থাকতে পেরে গর্বিত মনে হয়েছে। আমাদের আয়োজন ছোট না বড়, তা বড় কথা নয়। প্রথমবারের মত শুরু হল, নিজেদের উপস্থিতি জানান দেয়া হল, সেটাই বড় কথা।



এসএস/সিএ

সংবাদটি শেয়ার করুন