দেশের সংবাদ ফিচার্ড

টিকটকের খপ্পড়ে তরুণীরা, বাধ্য করা হয় পতিতাবৃত্তিতে

টিকটকের খপ্পড়ে তরুণীরা, বাধ্য করা হয় পতিতাবৃত্তিতে
টিকটকের খপ্পড়ে ফেলে জিম্মি করা হয় উঠতি বয়সী তরুণীদের। এরপর পাচার করা হয় ভারত, দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে। এমনকি বাধ্য করা হয় পতিতাবৃত্তিতে। ভারতে বাংলাদেশি তরুণী যৌন নির্যাতনের ঘটনায় বেরিয়ে এসেছে আন্তর্জাতিক নারী পাচারকারী চক্রের রোমহর্ষক তথ্য।
শনিবার (২৯ মে) সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ এমন রোমহর্ষক তথ্য জানায়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, তরুণ সমাজে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটক। দ্রুত খ্যাতি ও অর্থের লোভে অনেকেই আকৃষ্ট হন এর প্রতি। আর সেই সুযোগকেই কাজে লাগিয়ে উঠতি বয়সী তরুণীদের টার্গেট করে আন্তর্জাতিক মানবপাচারের জাল বিছিয়েছে একটি চক্র।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার বাংলাদেশি টিকটক হৃদয় বাবুসহ ৬ জনই আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত। এ চক্রের মূল কেন্দ্র বেঙ্গালুরু হলেও তারা দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশে নারীদের পাচার করে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করত।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার শহীদুল্লাহ বলেন, এটি আন্তর্জাতিক নারী পাচারের একটি চক্র বলে আমরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি। তাদের নেটওয়ার্ক অনেক বিস্তৃত। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং ভারতের কিছু কিছু এলাকায় এই নেটওয়ার্কের লোকজন কাজ করছে। দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের আরও কয়েকটি দেশে এ চক্রটির অবস্থান আছে। কয়েকটি হোটেলের সঙ্গে তাদের চুক্তি আছে। চুক্তি অনুযায়ী তারা মেয়েদের সরবরাহ করে। এর বিনিময়ে তারা টাকা উপার্জন করে।
স্কুলকলেজ শিক্ষার্থী ও গৃহবধূদের টার্গেট করে টিকটক গ্রুপের আওতায় নিয়ে পাচার করা হতো বলেও জানায় পুলিশ। উপ-পুলিশ কমিশনার শহীদুল্লাহ বলেন, স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়ে এবং গৃহবধূরাই তাদের টার্গেটের শিকার হয়।
এ ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে। জড়িতদের ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সদর দফতরের সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে ভারতেও মামলা হয়েছে। কিন্তু যেহেতু তারা বাংলাদেশি এবং এখানে মামলা হয়েছে তাই তাদের ফিরিয়ে আনতে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
তিনি বলেন, তদন্তে আরও বেশকিছু পাচারের তথ্য পাওয়া গোছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না। ভিকটিমের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।
ভারতে বাংলাদেশি ওই তরুণীকে যৌন নির্যাতন ও ভিডিও ধারণ করে অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৭ মে) হাতিরঝিল থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মেয়ের বাবা। প্রায় এক বছর ধরে নিখোঁজ থাকা মেয়েকে ভিডিও দেখে শনাক্তেন পর মামলা দায়ের করেন তিনি।
এর আগে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগ জানায়, সম্প্রতি কিশোরগঞ্জের এক তরুণীর যৌন নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। ভারতের কেরেলা রাজ্যে সংঘটিত ওই ঘটনায় ঢাকার হাতিরঝিলের রিফাদুল ইসলাম হৃদয় (২৬) নামে এক যুবকে শনাক্ত করে পুলিশ।
ওই সময় ডিসি মো. শহিদুল্লাহ জানান, গত কয়েকদিন ধরে ভারতে ধারণ করা তরুণীকে নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটির সূত্র ধরে তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়, নির্যাতনকারী ওই যুবকের নাম রিফাদুল ইসলাম হৃদয়। নিজ এলাকা হাতিরঝিলে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত রিফাতুল ইসলাম হৃদয়কে তার পরিবারের মাধ্যমে চিহ্নিত করা হয়।-আজকালের খবর
সংবাদটি শেয়ার করুন