কানাডার সংবাদ

করোনাভাইরাস: যে অনুজীব বিশ্বব্যাপীই আতংক ও তান্ডব সৃষ্টি করেছে


করোনাভাইরাস: যে অনুজীব বিশ্বব্যাপীই আতংক ও তান্ডব সৃষ্টি করেছে

বিদ্যুৎ ভৌমিক,  সিবিএনএ নিউজ ডেস্ক || বৈশ্বিক মহামারী করুনা ভাইরাস (কভিড-১৯) সাড়া বিশ্বজুড়ে বর্তমানে একটি বহুল আলোচিত আশংকা , উৎকন্ঠা ও  বহুল আলোচ্য বিষয়।

কোনভাবেই যেন বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রন করা সহজে সংক্রামিত হওয়ার এই ক্ষমতা সহ নিজের প্রতিরূপ তৈরি করে দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারা— এটাই  করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ভয়াবহ ও মারাত্মক দিক । অতীতে কোনও মহামারী ভাইরাস সারা বিশ্বের সকল দেশের ও অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এমন ভয়াবহ আশংকা ও উৎকন্ঠা ছড়ায়নি। তারপরও কোনভাবেই যেন বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসকে নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছেনা।  ২০২০ সাল বছরজুড়ে করোনাভাইরাসের তাণ্ডবই ছিল মূল আলোচ্য বিষয়। বিশ্বনেতা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ, columnist, social media , electronic media, সংবাদপএ, টিভি, গবেষক, বিজ্ঞানী, তারকা, —সবার কপালেই করোনা ফেলেছে ভীষম চিন্তার ভাঁজ । করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিই যেন স্হবির হয়ে পড়েছে । করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের প্রবৃদ্ধি নিয়ে খারাপ খবর দিয়েছিল আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। করোনা মহামারির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে ক্ষতি হবে, এর আর্থিক জের ১২ ট্রিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়াবে বলে আভাস দিয়েছে আইএমএফ। এক ট্রিলিয়ন সমান এক হাজার বিলিয়ন ডলার । এক  বিলিয়ন ডলার সমান একশত কোটি ডলার ।

ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, ১১ জানুয়ারী সোমবার ২০২১ খ্রী: সকাল ৬ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্বে ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসে মোট সনাক্তের সংখ্যা  ৯ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। এতএব বিশ্বে মোট সনাক্তের সংখ্যা বর্তমানে ৯ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজারের অধিক। । মাএ ১১ দিনের মধ্যে বিশ্বে করোনায় মোট সনাক্ত সংখ্যা বেড়েছে ৭৬ লাখের অধিক মানুষ এবং ১১ দিনেই  বিশ্বে ভয়াবহ করোনা কেড়ে নিল ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের  মূল্যবান জীবন। করোনাভাইরাসে বিশ্বে বর্তমানে মৃত্যু সংখ্যা হল ১৯ লাখ ৪৪ হাজারের অধিক মানুষ। একই সাথে সুখবর হল এই যে, বিশ্বব্যাপী এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬  কোটি ৪৮ লক্ষ ৯৪ হাজারের অধিক মানুষ । ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, ১১ জানুয়ারী সোমবার সকালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর সংখ্যা হল যুক্তরাষ্ট্রে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ২৭৫ জন । বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই যুক্তরাষ্ট্রে। ক্ষমতাধর এ দেশটিতে এ পর্যন্ত ২ কোটি ২৯ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৩৪ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪৯০ জন। ১১ জানুয়ারী সোমবার সকালে সনাক্তের দিক থেকে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ১ কোটি ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৪৩১ জন এবং একই সাথে মৃতের দিক থেকে ৩য় স্হান ভারতে এ পর্যন্ত মারা গেছে ১ লাখ ৫১ হাজার ১৯৮ জন এবং ভারতে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৯২ হাজার ৯০৯ জন । সনাক্তের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ল্যাটিন আমেরিকার বৃহওম দেশ ব্রাজিলে করোনায় ৮১ লাখ ৫ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যুর দিক থেকে ২য় স্হানে থাকা ব্রাজিলে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৩ হাজার ১৪০ জন  এবং ব্রাজিলে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৭১  লাখ  ৬৭ হাজার ৬৫১ জন । সনাক্তে চতুর্থ অবস্থানে থাকা আয়তনে বিশ্বের বৃহওম দেশ রাশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ৩৪ লাখ ২৫ হাজার  ২৬৯ জন,  এ পর্যন্ত রাশিয়ায় মারা গেছেন ৬২ হাজার ২৭৩ জন এবং রাশিয়ায় এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২৮ লাখ ৬৭৫ জন । পঞ্চম স্থান যুক্তরাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে বর্তমানে দাড়িয়েছে ৩০ লক্ষ ৭২ হাজার ৩৪৯ জন এবং যুক্তরাজ্যে মৃতের সংথ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৮১ হাজার ৪৩১  জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৪ লাখ ৬ হাজার ৯৬৭ জন । সনাক্তের দিক থেকে ৬ষ্ঠ স্হানে থাকা পশ্চিম ইউরোপের দেশ ফ্রান্সে এ পর্যন্ত করোনায় সংক্রমণের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ২৭ লাখ  ৮৩ হাজার ২৫৬ জন। এ পর্যন্ত ফ্রান্সে মৃত্যু হয়েছে ৬৭ হাজার ৭৫০ জনের এবং ফ্রান্সে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ২ হাজার ৪২৯ জন ৭ম  স্হান  তুরস্কে এ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত হয়েছে  ২৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৯১ জন,  তুরস্কে  এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছে ২২ হাজার ৮০৭ জন এবং এ পর্যন্ত  তুরস্কে সুস্থ হয়েছেন  ২১ লক্ষ ৯৮ হাজারের অধিক মানুষ। ৮ম স্হান ইতালিতে এ পর্যন্ত সনাক্ত হয়েছে ২২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৪৯১ জন  , ইতালিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৭৮ হাজার ৭৫৫  জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৬ লাখ ১৭ হাজারের অধিক মানুষ। ৯ম  স্হানে রয়েছে স্পেন । স্পেনে এ পর্যন্ত মোট সনাক্ত হয়েছে ২০ লক্ষ ৫০ হাজারের অধিক মানুষ, স্পেনে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৫১ হাজার ৮৭৪ জন । সনাক্তের দিক থেকে ১০ম  স্হান   ইউরোপের সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে  এ পর্যন্ত  সনাক্ত হয়েছে ১৯ লক্ষ ২৯ হাজার ৩৫৩ জন,  জার্মানিতে মৃতের সংথ্যা ৪১ হাজার ৪৩৪ জন  এবং জার্মানিতে সুস্থ হয়েছেন ১৫ লক্ষ ৪৫ হাজারের অধিক মানুষ । বিশ্বে সনাক্তের দিক দিয়ে ২৪তম  স্থানে থাকা আয়তনের দিক থেকে পৃথিবীর ২য় বৃহওম দেশ ক্যানাডায় করোনায় এ পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন ৬ লাখ ৬০ হাজার ২৮৯ জন। এ পর্যন্ত ক্যানাডায় মারা গেছেন ১৬ হাজার ৯৫০ জন এবং এ পর্যন্ত কানাডায় সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৫৮ হাজার ৭৭২ জন । বিশ্বে সনাক্তের দিক দিয়া ২৭তম স্থানে থাকা বাংলাদেশে এ পর্যন্ত করোনায় সনাক্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২২ হাজার ৪৫৩ জন। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মারা গেছেন ৭ হাজার ৭৮১ জন এবং বাংলাদেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৬৬ হাজার ৮০১ জন।

শীতকালে করোনারসংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারও বিধিনিষেধ কঠোর হয়েছে এশিয়া, ইউরোপ, উওর ও দক্ষিন আমেরিকা ও অষ্ট্রেলিয়ায়। আশংকাজনকভাবে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিধিনিষেধ কঠোর হয়েছে ক্যুইবেক সহ কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে । উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয় । ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাস বিশ্বে কিভাবে উৎপওি হয়েছে চীন থেকে তার আরও বিস্তারিত ভাবে চীনে গিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্হা World Health Organization, U.N.O, তদন্ত করে আসল সত্যিটা বের করা উচিত হবে বিশ্বে শান্তি, বিশ্বে স্হিতিশীলতা, বৈশ্বিক মহামারী প্রতিরোধে সঠিক ব্যবস্হা ও বিশ্ব অর্থনৈতিক উন্নতির বৃহওম স্বার্থে। কারণ চীনে গনতন্ত্র, আইনের শাসন, বাক স্বাধীনতা, মানবাধিকার, ধর্মসংবাদপএের স্বাধীনতা দুঃখজনক ভাবে অনুপস্হিত। হতাশার মধ্যেও আশার আলো এই যে. অনেক অনেক প্রতিক্ষার পর করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর ও নিরাপদভাবে  রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে সক্ষম ফাইজার-বায়োএনটেক,মডারনার ভ্যাকসিন  দেওয়া  শুরু হয়েছে কানাডা, আমেরিকা, ইউরোীয়ান ইউনিয়ন,  মধ্যপ্রাচ্য সহ, জাপান, কোরিয়া সহ অনেক দেশে ডিসেম্বর মাস থেকেই । আরো অনেক অনেখদেশে জানুয়ারীতে  vaccine দেওয়া শুরু হবে । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এত দ্রুত ভ্যাকসিন তৈরি এবং মানবদেহে প্রয়োগের এমন নজির আর নেই । বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ফাইজার-বায়োএনটেক,মডারনা ও এট্রোজেনেকা ও Oxford University কর্তৃক তৈরী Vaccineগুলো সবচেয়ে কারযকরী এবং সংখ্যাগরিষ্ঠমানুষের আস্হা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে ।ভয় নয়, সচেতনতাই করোনা প্রতিরোধে কার্যকরী পদক্ষেপ । আমাদের নিরাপদে থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন,   বাইরে চলাফেরার সময় আমরা প্রতিটি ব্যক্তি যদি মুখে মাস্ক ব্যবহার করি ও সাবান, পানি বা Hand sanitizer দিয়ে বারবার হাত ধোওয়ার চর্চা আয়ত্ত করি, আর যদি  ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে পারি তাহলে, করোনার ঝুঁকি দ্রুত কমানো সম্ভব হবে । সবাই সুস্হ থাকুন, ভাল থাকুন ও স্বাস্হ্য বিধি মেনে চলুন। এখন মানুষের হৃদয়ের একমাএ প্রত্যাশা ও দাবী, কত তাড়াতাড়ি মানুষের জীবনে  স্বস্তি ফিরে আসবে, করোনার Vaccine নিতে পারবে এবং জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে। সৃষ্টির শ্রেষ্ঠতম জীব মানুষ কিন্তু এগিয়ে চলার সপ্ন ও আশা দিয়েই বেঁচে থাকে । ২০২১ সাল বিশ্ব করোনামুক্ত হয়ে অর্থনৈতিক উন্নতির চাকা গতিশীল হবে এবং দিকে দিকে সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি ফিরে আসবে- এ প্রার্থনা ও প্রত্যাশা করছি সর্বান্তকরণে ।

তথ্য: ওয়ার্ল্ডোমিটার ( Worldometer )

কানাডা :১১ জানুয়ারী ২০২১ খ্রী: সকাল ৬ টা; বাংলাদেশ: ১১ জানুয়ারী ২০২১ খ্রী: সন্ধা ৫ টা

এসএস/সিএ

সর্বশেষ সংবাদ
দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com
সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন
সংবাদটি শেয়ার করুন