সাহিত্য ও কবিতা

আজিজ ভাই’র অগস্ত্য যাত্রা |||| বিশ্বজিৎ মানিক


আজিজ ভাই’র অগস্ত্য যাত্রা |||| বিশ্বজিৎ মানিক


শরতের এই প্রথম সকালে – তোমার বিদায় শুনে

ভিজে গেলো চোখ কম্পিত হৃদয়ে – ব্যাথা লাগে কতো প্রাণে।


অকাতরে প্রাণ দিয়ে গেলে তুমি – ক্যামনে জানাবো বিদায়

কতো ঋণ আছে তোমার কাছেতে – বলি আজ নির্ধিদায়।


কাঁপিয়েছিলে তুমি ছয় দফা কালে – রাজপথ মহা উত্তাপে

স্বপ্নের তরণী বেয়ে ছিলে সেদিন – স্বাধীনতার মন্ত্র জপে।


গণপরিষদের সদস্য হয়েছিলে – সত্তরের জাতীয় নির্বাচনে

বসতে পারোনি দেয়নি ওরা – পাকিস্তান সংসদ অধিবেশনে।


উত্তাল সময়ে আন্দোলন সংগ্রামে – ছিলে লড়াকু সৈনিক

কুণ্ঠিত হওনি দিতে বলিদান – প্রাণ ছিল তবো নির্ভীক।


বজ্র কণ্ঠে এসেছিলো ডাক – হাতিয়ার লওরে হাতে

সকলেরে তুমি দিয়েছিলে মন্ত্র – যারাই ছিলো তবো সাথে।


উচ্চারণ করেছিলে দীপ্ত কণ্ঠে – মুক্তির অমোঘ শপথ

খোঁজে নিয়েছিলে সেভাবেই তোমরা – বিজয়ের পার্থিব পথ।


হায় হায় হায় একি হলো হায় – গ্রেফতার হয়ে গেলে তুমি

নাকি কোনদিন হবেনা স্বাধীন – আমাদের প্রিয় জন্মভূমি?


না না না পারে নাই তারা – রাখতে তোমায় কারাগারে

সতীর্থ যারা ভেঙেছিল তালা – সক্ষম হয়েছিলো উদ্ধারে।


কারাগার থেকে বের হয়ে তুমি – অস্ত্র নিয়েছিলে হাতে

দেখেছিলে স্বপন করেছিলে পণ – ঘাতকের বদলা নিতে।


নেতৃত্বের কাজ কাঁধে ছিল তোমার – চার নং সেক্টরের

সম্মুখ যুদ্ধে নিয়েছিলে অংশ – মর্যাদা পেয়েছিলে বীরের।


স্বাধীন দেশে উড়িয়েছ তুমি – বিজয়ের পতাকা খানি

সশস্ত্র অভিবাদন জানিয়েছিল সেদিন – বীর মুক্তিবাহিনী।


যুদ্ধের কালে ঘাতকের হাতে – হয়েছিল দেশ অঙ্গার

সবে মিলে তোমরা করেছিলে শপথ-পুনরায় দেশটাকে গড়ার।


জাতির জনকের ছিলে তুমি এক – ঘনিষ্ঠ সহচর

রাষ্ট্রের দলীল পবিত্র সংবিধানে – করেছিলে তুমি স্বাক্ষর।


স্বাধীন দেশে নির্বাচন করে – দুইবার হয়েছিলে সাংসদ

অলংকৃত করেছিলে একাধিক বার – আমাদের জেলা পরিষদ।


জনহিতকর কতো কতো কাজ – হয়েছিল তোমার দ্বারা

ভুলবেনা তোমায় কোনোদিনও না – এ জেলার অধিবাসী যারা।


তোমার মরণে শোকাতুর আজ – কতো জ্ঞানী গুণিজন

রাষ্ট্রীয় সম্মানে ছেড়ে চলে গেলে – তোমার বিচরণ ভুবন।


তোমার অবদানে হয়েছিল একদিন – মুক্ত স্বদেশ ভুমি

মহানের কাছে প্রার্থনা করি – চির শান্তিতে থাকো তুমি।


১৮/০৮/২০২০ খ্রিস্টাব্দ।


সংবাদটি শেয়ার করুন