ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

কবিতাঃ প্রেম এক দুরারোগ্য ব্যাধি ।।।।  রফিকুল নাজিম

কবিতাঃ প্রেম এক দুরারোগ্য ব্যাধি ।।।।  রফিকুল নাজিম


ঘরহীন ঘরে আশার বসতি
রাঙামাটির এই দীঘল পথ হেঁটে যাব ভাবতেই
হুট করে সন্ধ্যা নামে পৃথিবীতে,
তোমার ঘরে ফেরার তাড়া বেড়ে যায়
কলঙ্কের চিনচিনে ভয় মনে আড়মোড়া দিয়ে ওঠে।
তোমাকে গান শুনাবো বলে আমি প্রিয় গানে টান দিতেই
কাকগুলো ভরদুপুরে কা কা স্বরে ডাকতে থাকে অবিরত
অথচ কাকের বেসুরো ডাকাডাকি বড্ড অলক্ষুণে….

তাই আমার আর গান গেয়ে ঘরে ফেরা হয় না
তুমিহীন ঘরকে আমার কাছে কবর কবর মনে হয়।
তাই আমি আর ঘরমুখো হই না
পথে পথে কেবল তোমাকেই খুঁজে যাই।

দেউলিয়া
নিজের জন্য কিছু মুহূর্ত তুলে রাখতে হয়
কতকটা মায়া জমাতে হয়,
নিজের জন্য কিছুটা ভালোবাসা তুলে রাখতে হয়
হঠাৎ প্রয়োজন হলে তখন নিজেকে ভালোবাসা যায়।
কিছু ভালো লাগা জমাতে হয় মনের সুস্থতার জন্য
সুখ-সমুদ্র থেকে কিছু সুখ তুলে রাখতে হয় আগামীর শিকায়।
এইসব তাপদাহকে মুছে দিতে লুকিয়ে রাখতে একটা বরষা
চৈত্রের ধূসর দাগ মুছতে জমিয়ে রাখতে হয় কয়েকটা ফাল্গুন।

অথচ আমি নিজের জন্য জমাইনি কিছুই!
তোমাকে সবটুকু দিয়ে আজ আমি সর্বশান্ত; দেউলিয়া।

প্রেম এক দুরারোগ্য ব্যাধি
চোখ বুজি
চোখ খুলি
চোখ বুজা আর চোখ খোলার মাঝখানে
এক মুহূর্তের জন্যও যদি আমি তোমাকে ভুলতে পারতাম!

মায়া,
তোমাকে মনে রাখার মত যন্ত্রণা আর নেই
তোমাকে ভুলতে চাওয়ার মত যন্ত্রণা আর নেই,
প্রেম- এক দুরারোগ্য ব্যাধি।

রংমিস্ত্রি
মানুষ স্বভাবতই রংমিস্ত্রি
জীর্ণ দেয়াল থেকে ঘষে ঘষে শ্যাওলা তুলে
সমূলে উৎপাটন করে পরগাছার শিকড়-বাকড়
অন্দরমহলের পুরাতন দাগগুলো মুছে দেয়
বর্ণিল রঙের চকচকে হয়ে যায় সুপ্রাচীণ ক্ষয়িষ্ণু প্রাসাদ!

মানুষ স্বভাবতই রংমিস্ত্রি
বুকের আস্তিনের নিচে জমাট ধূলোর আস্তরণ
কিংবা পোকায় খাওয়া পাতার দাগগুলো
একদিন মুছে দেয় ফাল্গুনের রঙ
ক্ষত-বিক্ষত বুকের জমিনেও মানুষ চাষ করে স্বপ্ন-ফুল।
স্বভাবতই মানুষ রংমিস্ত্রি!
রঙের আঁচড়ে ঢেকে দিতে জানে জাগতিক ব্যথা-বেদনা।

মাধবপুর, হবিগঞ্জ।

সংবাদটি শেয়ার করুন