প্রবাসের সংবাদ

মার্কিন মিডিয়ায় বাঙালি ব্যবসায়ী বাদলের উত্থানের গল্প

মার্কিন মিডিয়ায় বাঙালি ব্যবসায়ী বাদলের উত্থানের গল্প

‘জিরো থেকে হিরো’ হলেন বাংলাদেশি আমেরিকান ব্যবসায়ী আকতার হোসেন বাদল।  মার্কিন মিডিয়ায় বাঙালি ব্যবসায়ী বাদলের উত্থানের গল্প গত ৩০ জানুয়ারি ‘বিল্ডিং এ বিজনেস ফ্রম দ্য বটম’ শিরোনামে মূলধারার সংবাদপত্র ‘লং আইল্যান্ড হেরাল্ড’ বাদলের (মৌ হোসেন নামে খ্যাত আমেরিকানদের কাছে) উত্থানের আলোকে একটি সংবাদ প্রকাশ করেছে।

কুইন্সের ফ্লাশিংয়ের বাসিন্দা আকতার হোসেন বাদল (৫৫) ৩৫ বছর আগে স্টুডেন্ট ভিসায় নিউইয়র্কে আসার পর আমেরিকান স্বপ্ন পূরণের পথে কী ধরনের কষ্ট সহ্য করেছেন এবং প্রত্যয়ের সাথে কাজ করেছেন-সে সব তথ্য বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে এই সংবাদে।

২০০০ সালে আরএলবি কন্সট্রাকশন নামে একটি নির্মাণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠার পর সিটির ৫ বরোতেই দাপিয়ে ব্যবসা করেছেন। ব্রিজ, স্কুল ভবন, এপার্টমেন্ট ভবন, হাসপাতালের সম্প্রসারণ, রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করে সিটি এবং স্টেটসহ বিভিন্ন পর্যায় থেকে সম্মাননা লাভ করেছেন আকতার হোসেন বাদল।

বাদলের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি প্রকাশ করেছে ‘নির্মাণ ব্যবসায় সাফল্যের চাবিকাঠি হচ্ছে নির্দেশ অনুযায়ী যথাসময়ে কাজ সম্পন্ন করা। রাতারাতি সাফল্য আসে না। এজন্যে সময়ের প্রয়োজন। সুনামের সাথে কাজ করলে একদিন সাফল্য ধরা দেবেই।’

ঐ সংবাদে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারি বাদল ২০ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের একটি হাই স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন করেন। এরপর ফোরড্যাম ইউনিভার্সিটি থেকে ব্যাচেলর করেছেন কৃতিত্বের সাথে। চাকরি পেতে তাকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। চাকরির জন্যে রেফারেন্স ছিল না তার। এ অবস্থায় তিনি কঠিন সংকটে পড়েন বাসা ভাড়া ও দৈনন্দিন খাবার নিয়ে। উপায়ন্তর না দেখে এলাকার স্টেট সিনেটর ইফ্রেইন গঞ্জালেজ জুনিয়রের শরনাপন্ন হন। তার কাছে আবেদন করেন সিটি শেল্টারে অবস্থানের জন্য। এমন সংকটের মধ্যেই ফ্লোরশিম জুতা কোম্পানীতে কাজ পেয়ে যান চাঁদপুরের সন্তান বাদল।

সেখানে কাজের মাধ্যমেই হেরাল্ড স্কোয়ারের সন্নিকটে কোম্পানীর স্টোরে ম্যানেজার পদে অধিষ্ঠিত হন বাদল। তবে বেশিদিন তার ভাগ্যে সুখ সয়নি। কারণ, স্টোরটি বন্ধ হয়ে যায় কয়েক মাসের মধ্যেই। অর্থাৎ পুনরায় বেকার হয়ে পড়েন তিনি। এরপর আবারো স্টেট সিনেটর গঞ্জালেজের অফিসে যান সহযোগিতার জন্যে। সে সময় সিনেটর তাকে নিজস্ব ব্যবসা খোলার পরামর্শ দেন। কন্সট্রাকশন বিজনেস সবচেয়ে ভালো হবে বলেও উল্লেখ করেন সিনেটর গঞ্জালেজ।

গঞ্জালেজের পরামর্শে বাদল কন্সট্রাকশন ব্যবসা শুরু করলেও তার সাথে সখ্যতা স্থায়ী হয়নি। কারণ, কোন এক দুর্নীতির কারণে সিনেটর গঞ্জালেজকে জেলে যেতে হয়। এরপরেও আকতার হোসেন বাদল গঞ্জালেজের প্রতি কৃতজ্ঞ, কারণ তিনি তার চরম সংকটে পাশে ছিলেন।

দুই হাজার সালের শুরুতে নির্মাণ ব্যবসা তেমন ভালো যাচ্ছিল না। ফলে ব্যাংক থেকেও ঋণ নিতে সক্ষম হননি নতুন ব্যবসায়ী বাদল। সে সময়ে পাশে দাঁড়ায় খ্যাতনামা নির্মাণ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ‘টুলি কন্সট্রাকশন’।

২০১৩ সালে বাদলের নতুন ভাবনায় রেস্টুরেন্ট চালু হলো। কিন্তু সে ব্যবসায় ন্যূনতম অধিজ্ঞতা/ধারণা ছিল না বলে সেটি স্থায়ী হতে পারেনি।

বাদলের পরবর্তী পরিকল্পনায় রয়েছে কানেকটিকাট রাজ্যে আরএলবি সেইফটি স্টোর খোলার। এভাবেই ব্যবসার মাধ্যমে নিজের ভাগ্য প্রসন্ন করার পাশপাপাশি পরিচিতদের মধ্যে যারা কষ্টে দিনাতিপাত করছেন তাদেরকেও সহায়তা অব্যাহত রাখবেন।

ডেমক্র্যাটিক পার্টির তৃণমূলের সংগঠক বাদলের এই অগ্রযাত্রায় আপ্লুত লং আইল্যান্ডের ‘লংবীচ চেম্বার অব কমার্স’র প্রেসিডেন্ট এডোয়ার্ড স্কারফবার্গ। তিনি বাদলকে কাছে নিয়ে ‘ট্রাম্পের কারণে হতাশাগ্রস্ত অভিবাসীদের জন্যে পথ-প্রদর্শক’ বলে মন্তব্য করেছেন বহুজাতিক একটি ব্যবসায়ী সমাবেশে। একইসাথে বাদলকে এই চেম্বারের নির্বাহী সদস্য হিসেবেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ                                 

কানাডার সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com 

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen + three =