অবিশ্বাস্য হলেও সত্য

এক ঘুমেই সপ্তাহ পার ভম্বলের

এক ঘুমেই সপ্তাহ পার
ভম্বল শীল

এক ঘুমেই সপ্তাহ পার ভম্বলের

এক ঘুমে কাটিয়ে দেন টানা সাতদিন। প্রাকৃতিক কাজও সারেন ঘুমিয়ে। গোসল করতে পুকুরে নামলে সকাল পেরিয়ে হয় বিকাল। একাই খেয়ে ফেলেন আট দশ জনের খাবার। মানিকগঞ্জে এমনই অদ্ভুত প্রকৃতির এক মানবের সন্ধান পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের অক্ষয় শীলের ছোট ছেলে ভম্বল শীল। প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি এমন অস্বাভাবিক জীবন-যাপন করে আসছেন বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা।

ভম্বল শীলের ভাই সংকর শীল জানান, আমার ছোট ভাই ভম্বলের বয়স ৩৮ বছর। ওর এমন সমস্যা প্রায় ২০ বছর ধরে। ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল ভম্বল। তারপর থেকেই তার এমন পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। আগে এত গুরুতর ছিল না এই সমস্যা। দিন যত যাচ্ছে সমস্যা আরও বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘দু-তিনবার পাবনা মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল ভম্বলকে। তারা বলেছিল দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা করলে সে ঠিক হয়ে যাবে। আমি অভাবী মানুষ, ফুটপাতে সেলুনের কাজ করি। দিনে দেড় দুইশো টাকা আয় হয়। আমার যে আয় তা দিয়ে নিজের পরিবারই চলে না। ভাইকে চিকিৎসা করানোর মতো সামর্থ্য আমার নেই। সমাজের কোনো সহৃদয়বান ব্যক্তি যদি আমার ভাইকে চিকিৎসা করানোর দায়িত্ব নিতো তাহলে ভম্বল স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারতো।’

ভম্বলের ভাইয়ের স্ত্রী কল্পনা শীল বলেন, ‘উনি (ভম্বল) নিজের ইচ্ছা মতোই চলে। কেউ ডাকাডাকি করলেও শোনে না। সারাদিন পড়ে পড়ে ঘুমায়। ১৫-২০ দিন পরপর গোসল করে। সকালে গোসল করতে গেলে বিকেলে আসে। আর উনি একাই কয়েক জনের খাবার খেতে পারে। সবসময় পেট ভরে খাবার খেতে দিতে পারি না আমরা। আমাদের সামর্থ্য মতো যতটুকু দিতে পারি তাতে ওনার হয় না। কোনো অনুষ্ঠানের দাওয়াতে গেলেই কেবল পেট ভরে খেতে পারে।’

প্রতিবেশী বিপুল গোস্বামী বলেন, ভম্বল না খেয়েই পাঁচ-সাতদিন পার করে দেয়। বাড়ির লোক ডাকাডাকি করলেও বলে একটু পরে উঠবো। এই বলে আবার ঘুমায়। আর ও একাই এক-দেড় কেজি চালের ভাত খেতে পারে।

ভম্বল শীল বলেন, ‘একটানা পাঁচ-সাতদিন ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিয়েছি কোনোকিছু না খেয়েই। হাজার হাজার দিন চলে গেছে দুই-চারদিন ঘুমিয়েই। এক ফোঁটা পানিও খাইনি তখন।’

নিজের জীবন সম্পর্কে ভম্বল বলেন, ‘ছয় বছর আগে আমাকে বিয়ে করানো হয়েছিল। স্ত্রী এখন আর আমার সাথে থাকে না। বালিরটেক বাজারে দীর্ঘ কয়েক বছর রাতে পাহাড়াদারের কাজ করেছি। তার বিনিময়ে বাজার কমিটির লোকেরা আমাকে কোনো পারিশ্রমিকই দেয়নি। মাঝে মাঝে ৫০-৬০ টাকা দিয়েছে। এভাবেই আমাকে ঠকিয়েছে তারা।’

কেন এত ঘুমান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার শরীর অত্যন্ত দুর্বল, অস্থির অস্থির লাগে তাই খালি ঘুম আসে। আগেতো পাহাড়াদারের কাজ করতাম কিন্তু এখনতো কোনো কাজ বা আয় রোজগার নাই, তাই ঘুমাই। আর ঘুমাইলে ক্ষুধা লাগে না।’

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ জানান, ভম্বল শীল জটিল মানসিক রোগে আক্রান্ত। যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা যাবে তত তাড়াতাড়িই সুস্থ হবেন তিনি। -সূত্রঃ আমাদেরসময়



সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

 

 

সংবাদটি শেয়ার করুন