দেশের সংবাদ ফিচার্ড

চা শ্রমিকদের ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

চা শ্রমিকদের ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘চা শ্রমিকদের সঙ্গে আমাদের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বঙ্গবন্ধু প্রথম চা শ্রমিক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। সেই সময় তিনি চা শ্রমিক ও চা শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধু সংবিধানের মধ্যেমে চা শ্রমিকদের ভোটাধিকার ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করেন। আওয়ামী সরকারের আমলে চা উৎপাদন বাড়ানোর জন্য পঞ্চগড়ে চা বাগান তৈরি করা হয়।’ চা শ্রমিকদের ঘর করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, চা শ্রমিকরা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক ভূমিকা রেখেছেন। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের কথা চিন্তা করে তাদের মজুরি বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ যেন কষ্ট না থাকে সে জন্য আমরা অন্য, বস্ত্র, শিক্ষা-চিকিৎসা প্রদানের ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আপনাদের নাগরিকত্ব দিয়েছেন আর আমি আপনাদের ঘর করে দেব। চা বাগান হলো দেশের সৌন্দর্য। এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’
 
শনিবার ৩ সেপ্টেম্বর বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মৌলভীবাজারের  কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা বাগানের দলই ভ্যালি মাঠ থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জেলার ৯২টি চা বাগানের শ্রমিকেরা ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। এ সময় জেলার অন্যান্য উপজেলার চা বাগানে তিনটি করে প্রজেক্টরেরে মাধ্যমে পুরো ভিডিও কনফারেন্সটি দেখানো হয়। এ ছাড়া  হবিগঞ্জের চন্ডিছড়া চা বাগান, সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগান ও চট্টগ্রামের কর্ণফুলী চা বাগানের শ্রমিকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
ভিডিও কনফারেন্সে শ্রমিকরা দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। 
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে চা শ্রমিক গিতা পাইনকা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনি আপনার বাবার মতো আমাদের পাশে আছেন। আপনি আমাদের মা জননী, আপনি মজুরি বৃদ্ধির জন্য যে কষ্ট করেছেন এর জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের কষ্ট বোঝার জন্য ধন্যবাদ।’
চা শ্রমিকদের সঙ্গে এই প্রথম সরাসরি কথা বলায় মৌলভীবাজারের শ্রমিকেরা আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যদি মজুরি বৃদ্ধির উদ্যোগ না নিতেন তাহলে তাদের মজুরি ৫০ টাকা বৃদ্ধি হতো না। 
পাত্রখোলা চা বাগানে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, মৌলভীবাজার সদর- রাজনগর আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নেছার আহমেদ, মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মিসবাহুর রহমান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমান, কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত উদ্দিন, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের উপদেষ্টা রামভজন কৈরি, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পালসহ বিভিন্ন ভ্যালির সভাপতি-সম্পাদক, বাগানের পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  
উল্লেখ্য, মজুরি বাড়ানোর দাবিতে টানা ১৯দিন আন্দোলন করেন দেশের সকল চা বাগানের শ্রমিকেরা। মজুরি বৃদ্ধির দাবির পর গত ২৭ আগস্ট বাগান মালিকদের সঙ্গে গণভবনে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে বাগান মালিকদের সঙ্গে আলাপ করে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রায় ১৯ দিন পর থেকে বাগানে কাজে ফেরেন আন্দোলনরত চা শ্রমিকরা। তবে আন্দোলনের শুরু থেকেই তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সংবাদটি শেয়ার করুন