ফিচার্ড সাহিত্য ও কবিতা

জয়িতা চট্টোপাধ্যায় এর কবিতাগুচ্ছ

জয়িতা চট্টোপাধ্যায় এর কবিতাগুচ্ছ


সম্বল

তোমার চোখ থেকে চোখ সরিয়ে নিলে
ভেসে ওঠে অসংখ্য মানুষ
সমস্ত গান থেকে ঝরে যায়
একটু একটু করে পালক
তোমার শরীর থেকে বেড়িয়ে আসে ধারাজল
আলতো করে মুছিয়ে দিই
তুমি আজ গান হয়ে ওঠো
ভালোবাসাই হোক একমাত্র সম্বল।।

সম্ভাবনা:
আজ ফিরিয়ে দাও অব্যক্ত রাত
হে বিধাতা এই মরুভূমি কে আকাশ করো
ভরে যাক সবুজ রন্ধ্রে রন্ধ্রে
দাও নিদারুণ বৃষ্টিপাত
দাও রঙিন প্রশান্তি
আজ মুঠো ভরে দাও জলে
মেঘ তুমি তো জানো না
কত রাত ঘুমাই নি আমি,
শুধু বৃষ্টি আসবে বলে।।

বন্দর
খুব চেনা একটা গন্ধ আমাকে ঘিরে ধরছে
যেন ঘিরে ধরছে ভোর
তোমার গান থেকে জন্ম নিয়েছে অজস্র ভোরবেলা
জন্ম নিয়েছে নতুন কত মোড়
তুমি যে অনন্ত দৃঢ়তায় আমার হাত ধরে থাকো
আমিও সুস্পষ্ট চুম্বন এঁকে দিই কপালে
বলি, বন্দর এবার অপেক্ষায় জাগো।।

পূর্বজন্ম:
না আমার আর কোনো চমৎকারের প্রয়োজন  নেই
লাল সূর্য টা যখন গলে যাচ্ছে সমুদ্রের বুকে
ঠিক তখনই আমি শিউরে উঠলাম
আমার নিয়তি উঠে আসছে
জল রঙের দিগন্ত রেখা বরাবর
আমি নিঃসঙ্গ হয়ে যাচ্ছি
নিসর্গের মুখোমুখি আমি এসে দাঁড়িয়েছি
ভালোবাসা কে চিনতাম আগে
এখন আর তার মুখ ভালো করে মনে পড়ে না
উতলা হয়ে ওঠে না শরীর মন
একলা হওয়ার নেশায় আমাকে জড়িয়ে ধরল প্রবল হাওয়া, আজ আমার শরীর শূন্যতার সঙ্গে সঙ্গম করবে, বেদনার নীল মুছে নিই দুহাত থেকে
আর খুঁড়ে চলি ভেজা বালিতে আমার পূর্ব জন্মের ইতিহাস।।

গহিনে:
আমি ধীরে ধীরে হারিয়ে ফেলছি সর্বস্ব
পাথরের বুকে আর প্রজাপতি আসে না
পাগলের মতো কষ্ট থেকে বাঁচাতে তবু
তুমি একমাত্র তা পারো
কে যেন আমাকে বলেছিল তোমার প্রেমে পড়তে
আর তুমি পালিয়ে যাচ্ছো একটু একটু করে
ধুলোর ভেতরে লুকিয়ে রাখি তোমার খুনের কেচ্ছা
তবু বলিনি আমার সমস্ত কষ্টের জন্য তুমিই দায়ী, কতো নিসর্গ রয়েছে, আমি ভুলতে পারিনি তাই।।

ক্যানভাস ২
তুমি একটা সবুজ মাঠ দিয়েছিলে
আমি মনে করেছিলাম ওটা একটা ফাঁকা ক্যানভাস
যেখানে আঁকতে বলেছিলে নদী, গাছ, পাহাড়
অস্তগামী সূর্য একটা আস্ত
কিন্তু আমি তুলির আঁচড়ে এঁকে চলেছি ফালা ফালা কিছু রক্ত নদী
কিছু কালো দাগ, কিছু অন্ধকার।।
সংবাদটি শেয়ার করুন