প্রবাসের সংবাদ ফিচার্ড

জাপানি যৌনকর্মী ও ভারতীয় শ্রমিক: সিঙ্গাপুরের ভুলে যাওয়া অভিবাসীদের গল্প

জাপানি যৌনকর্মী ও ভারতীয় শ্রমিক: সিঙ্গাপুরের ভুলে যাওয়া অভিবাসীদের গল্প

সিঙ্গাপুরের প্রথম দিককার অভিবাসীদের নিয়ে দেশটিতে প্রচুর আলোচনা হয়। তবে ১৯ শতকের শেষ দিকে যেসব জাপানি মেয়েদের যৌনকর্মী হিসেবে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়েছিল তাদের নিয়ে খুব একটা কথা বলতে দেখা যায় না কাউকে। সেখানে পাঠানো হতো ভারতীয় অপরাধীদেরও, যারা কঠিন শ্রমের মধ্য দিয়ে নিজের সাজা ভোগ করতেন। কিন্তু সিঙ্গাপুরের এই অভিবাসীদের কথা কেউ মনে রাখেনি। দেশটির চলচিত্র নির্মাতা উইসলি লিওন আরুজু বলেন, আমার কোনো ধারণাই ছিল না যে, আমাদের এখানে একসময় জাপান থেকে যৌনকর্মী আসতো। এই যৌনকর্মীরা ইতিহাসে কারায়ুকি-সান নামে পরিচিত ৩৭ বছর বয়সী লিওন লাইব্রেরির ইতিহাস সেকশনে জাপান থেকে আসা এই কারায়ুকি-সানদের নিয়ে পড়ার সুযোগ পান। তিনি যত পড়ছিলেন তিনি তত অনুভব করছিলেন যে, সিঙ্গাপুরের এই অভিবাসীদের নিয়ে লেখা প্রয়োজন।তিনি বলেন, আমি যদি না লেখি তাহলে একসময় হয়তো তাদের কথা মানুষ পুরোপুরি ভুলে যাবে। তার লেখা প্রথম উপন্যাস হতে যাচ্ছে কারায়ুকিদের নিয়ে।

তিনি এর নাম দিয়েছেন ‘দ্য পাংখাওয়ালা এন্ড দ্য প্রোস্টিটিউট’।

১৮৭০ সালের দিকে জাপান থেকে জাহাজে করে সিঙ্গাপুরে আসে ১৫ বছর বয়সী ওসেকি। এখানে তার এক সিঙ্গাপুরি ছেলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বিক্রি করে দেয়া হয় যৌনকর্মী হিসেবে। তার সঙ্গে দেখা হয় গোভিন্দ নামের এক ভারতীয় অপরাধীর যিনি পাংখাওয়ালা হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় গরমের মধ্যে ফ্যান চালাতে বিদ্যুতের পরিবর্তে এই পাংখাওয়ালাদের নিয়োগ দেয়া হতো। তারা ঘরের বাইরে থেকে দড়ি টেনে এই ফ্যান চালাতেন।

এপিগ্রাম বুকস ফিকশন পুরস্কারের ক্ষুদ্র তালিকায় যে উপন্যাসগুলো জায়গা করে নিয়েছে তার মধ্যে এই উপন্যাসটি একটি। এতে আরও স্থান পেয়েছে লেখিকা মিহান বোয়ের লেখা প্রথম উপন্যাস ‘দ্যা ফরমিডেবল মিস ক্যাসিডি’ এবং পল্লবী গোপিনাথ অ্যানির লেখা ‘কপি, পাফস এন্ড ড্রিমস’। ১৯০০ সালের দিকে ভারতের কেরালা থেকে ২ অভিবাসী কীভাবে সিঙ্গাপুরে গেলো তা নিয়ে লেখা এই উপন্যাস। ৪১ বছর বয়সী গোপিনাথ ভারতের রাজধানী দিল্লিতে জন্মেছেন এবং কাজের জন্য ২৫ বছর বয়স থেকে সিঙ্গাপুরে আছেন।ওই উপন্যাসের প্রধান দুই চরিত্র পুথু ও কৃষাণ। তাদের দেখা হয় মালয়গামী একটি জাহাজে। তারা সেখানে উপনিবেশিক বাগান চাষের কাজে নিয়োগ পান। তবে সেই চাকরি চলে গেলে তারা দুজন সিঙ্গাপুরে একটি রেস্তোরাঁ খোলেন। এতে তারা পাফস ও কফি বিক্রি করতে শুরু করেন তারা। দুই দশকের মধ্যে তারা বড় ব্যবসায়ি হয়ে ওঠেন।

গোপিনাথ জানান, সিঙ্গাপুরে দক্ষিণ এশীয় অভিবাসীদের নিয়ে অনেক গবেষণা পড়েছেন তিনি। তবে এ নিয়ে কখনো উপন্যাস লেখা হয়নি। তিনি বলেন, আমি মানুষকে এই অভিবাসীদের গল্প বলতে চেয়েছি। তারা কত কিছু ফেলে সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলেন, তাদের স্বপ্ন কত বড় ছিল। আমি আমার গল্পে কোনো নায়ক বা ভিক্টিম সৃষ্টি করতে চাইনি। আমার উদ্দেশ্য ছিল, সে সময়কার ‘সপ্নের শহর’ সিঙ্গাপুরকে লেখার মধ্যে ধরে আনা।




সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন