জীবন ও স্বাস্থ্য ফিচার্ড

২৯ দেশে ল্যামডা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার, বিজ্ঞানীরা যা বলছেন

২৯ দেশে ল্যামডা ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার, বিজ্ঞানীরা যা বলছেন

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনা ভাইরাসের ভ্যারিয়েন্ট ল্যামডার বিস্তার ঘটেছে কমপক্ষে ২৯টি দেশে। এই ভ্যারিয়েন্ট প্রথম শনাক্ত হয় লাতিন আমেরিকার দেশ পেরুতে। সেখানে এখন প্রতি এক লাখে গড় মৃতুর হার সর্বাধিক। এই হার ৫৯৬। এর পরে খারাপ অবস্থায় রয়েছে হাঙ্গেরি। সেখানকার গড় মৃত্যু হারের দ্বিগুন পেরুতে। হাঙ্গেরিতে প্রতি এক লাখে মারা গেছেন ৩০৭ জন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন সায়েন্স এলার্ট।

করোনা মহামারিতে পেরু এত বাজেভাবে আক্রান্ত হওয়ার বেশ কিছু কারণ আছে। দেশটিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় প্রস্তুতি নেই। আছে হাতেগোণা অল্প কয়েকটি আইসিইউ বেড। টিকা দেয়ায় ধীর গতি। পরীক্ষায় সীমিত সক্ষমতা। অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতে জড়িত অনেক বেশি মানুষ। তারা ঠিক মতো কাজ পান না। জনসাধারণ বসবাস করে গাদাগাদি করে। গত বছর আগস্টে প্রথম ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয় পেরুতে। তারপর এ বছর এপ্রিলে পেরুতে শতকরা ৯৭ ভাগই এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত বলে জানানো হয়।

এই ভ্যারিয়েন্ট এখন বিশ্বজুড়ে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। ১৪ই জুন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে ‘গ্লোবাল ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট’ বা ভিওআই হিসেবে ঘোষণা করে। পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড এরপরে ২৩ শে জুন একে ‘ভ্যারিয়েন্ট আন্ডার ইনভেস্টিগেশন’ হিসেবে চিহ্নিত করে। কারণ, এর রয়েছে নিজের মধ্যে সম্প্রসারণ প্রবণতা এবং আছে বেশ কয়েক রকম রূপান্তর। বৃটেনে আট জনের শরীরে এই ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। এর বেশির ভাগের বিদেশে সফরের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট হিসেবে সেইসব রূপান্তরকে বুঝানো হয়, যা সহজেই বিস্তার লাভ করে, রোগের ভয়াবহতা সৃষ্টি করে, আগের সংক্রমণ বা টিকা থেকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে এড়িয়ে চলার সক্ষমতা রাখে অথবা পরীক্ষায় ধরা পড়ে না। অনেক বিজ্ঞানী ল্যামডা ভ্যারিয়েন্টের অস্বাভাবিক সমন্বয়ের বিষয়ে কথা বলেছেন। রূপান্তরের সময় এই সমন্বয় বা বিন্যাসের কারণে এই ভ্যারিয়েন্ট অনেক বেশি সংক্রমণযোগ্য। স্পাইক প্রোটিনের ওপর সাত রকম রূপান্তর আছে ল্যামডার। এইসব রূপান্তরের ফলে ল্যামডাকে আমাদের শরীরের কোষে প্রবেশ করতে সহায়তা করে। এ কারণে ভ্যারিয়েন্ট ও ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য আমাদের শরীরে যে এন্টিবডি তৈরি হয়, তাকে ফাঁকি দিতে পারে।

এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, নিষ্ক্রিয় এন্টিবডিগুলোই আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় একমাত্র হাতিয়ার নয়। এক্ষেত্রে টি-সেলও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। মূল করোনা ভাইরাসের চেয়ে এসব রূপান্তর কিভাবে ল্যামডাকে আরো বেশি বিপজ্জনক করে তোলে, সে বিষয়ে আমাদের কাছে কি তথ্যপ্রমাণ রয়েছে? ল্যামডা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে কোনো প্রকাশিত গবেষণা নেই। প্রকাশ হওয়ার আগের কিছু তথ্য হাতে আছে। এসব বিষয় এখনও অন্য বিজ্ঞানীদের দিয়ে রিভিউ বা পর্যালোচনা করাতে হবে এবং তা জার্নালে প্রকাশ হতে হবে।

নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি গ্রোসম্যান স্কুল অব মেডিসিনের প্রকাশ হওয়ার আগে এমন একটি গবেষণা রয়েছে। তারা ল্যামডা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে ফাইজার এবং মডার্নার টিকা কতটা কার্যকর তা নিয়ে গবেষণা করেছে। তাতে বলা হয়েছে, মূল ভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা যতটা কার্যকর, এন্টিবডি সৃষ্টি করে, এই ভ্যারিয়েন্ট তার চেয়ে দুই থেকে তিনগুন কম এন্টিবডি তৈরি করতে দেয়। ইউনিভার্সিটি অব চিলির গবেষকরা সিনোভ্যাক টিকা নিয়ে ল্যামডা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে কতটা কাজ করে সেই গবেষণা করেছেন। এই দুটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, নিষ্ক্রিয়তা কমপক্ষে কিছু অংশ রয়ে গেছে, যা আশাব্যঞ্জক।

-সূত্রঃ মানবজমিন


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে CBNA24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

আমাদের ফেসবুক পেজ   https://www.facebook.com/deshdiganta.cbna24 লাইক দিন এবং অভিমত জানান

সংবাদটি শেয়ার করুন