লেখালেখি

থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে

মৃত্যুর মিছিলে শব্দহীন বিশ্বযুদ্ধ, থাকব না কো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে

থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে , কেমন করে ঘুরছে মানুষ যুগান্তরের ঘুর্ণিপাকে।

সম্পূর্ণ কবিতাটি পড়তে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের  জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর সংকল্প কবিতার লাইনকে সামনে নিয়েই বাইরে বের হই।  বাইরে ঝকঝকে রোদ। আর কত দিন কত সময় এভাবে বন্দি থাকা যায়?  অকল্পনীয়, অচিন্তনীয়, অবিশ্বাস্য এক মৃত্যভয়ে ঘরে থাকতে থাকতে প্রাণান্ত। লকডাউনে থাকতে থাকতে মনে হয় যেনো শরীরটাই লকডাউন হয়ে যাচ্ছে।  ঘরে থাকতে থাকতে শরীরের ওজন বেড়ে গেছে। চুল-দাড়ি সাদা ধবধবে আর লম্বা হয়ে ভবঘুরে মনে হয়! টিভিতে কোন নতুন অনুষ্ঠান না হওয়াতে  একই অনুষ্ঠান আর  ছবিগুলো দেখেতে দেখতে প্রায় মুখস্ত হয়ে যাচ্ছে। সোফার অবস্থা প্রায় প্রাণান্ত। কম্পিউটারগুলো ক্লান্ত। ইন্টারনেট ঠিক সম্মুখ যোদ্ধাদের মতো কাজ করতে করতে ক্লান্ত।



ক্যামেরায় ক্লিক দেয়নি অনেক দিন। তা কি ভাবা যায়? ঘরে থাকতে থাকতে মনে হয় যেনো আমাদের মতো ক্যামেরার বয়সও বেড়ে গেছে।  মনে হয় যেনো ক্যামেরাটাও ক্লান্ত। সবকিছুকে উপেক্ষা করে গিন্নীকে নিয়ে হাঁটতে বের হই। সঙ্গে ক্যামেরা। লাসালশহরের ব্যস্ততম রাস্তাগুলো জনমানবহীন দুপুর। ভাবা যায়? ছবি তোলার মতো কিছুই নেই। রাস্তা ফাঁকা, দোকান রেস্টুরেন্ট, ক্লিনিক বন্ধ।  পত্র-পত্রপ্ল্লবহীন বাতাসে দুলছে গাছগুলো।  মাঝে মধ্যে দু’একটা জরুরি কাজে গাড়ী ছুটছে। কেউ কেউ সাইকেল চালাচ্ছে। কেউবা ব্যালকনিতে বসে পরিবারের লোকজন নিয়ে আড্ডা মারছে কিংবা সিগারেট টানছে। পার্কগুলো খালি, পার্কের বৃক্ষগুলো যেনো আকাশ পানে ক্রন্দনরত, মুক্তি দাও, মুক্তি দাও! এ অবিশ্বাস্য অকল্পনীয় মুনিষ্য কোলাহলহীন পার্ক, যেখানে শিশুদের পদভারে বিকশিত হতো বৃক্ষগুলো !  দু-চারজন মাস্কপড়া যাত্রি নিয়ে চলছে বাস। যাক্ হাঁটতে হাঁটতে অবশেষে নিজের ছবি তুলেই ধন্য কললাম নিজের ক্যামেরাকে।

হাঁটতে হাঁটতেই অনেকের ফোন পেলাম। সবার একই অভিযোগ। তা কি করে হয়? ক্যুইবেকের মূখ্যমন্ত্রী কি করে প্রাইমারি স্কুল আর ডে কেয়ার খোলার সিদ্ধান্ত নিলেন? যেখানে করোনাভাইরাসের মৃত্যুর সংখ্যা কানাডায় বিশেষ করে ক্যুইবেকে বাড়ছে সেখানে এ রকমের সিদ্ধান্ত আত্মঘাতি নয় কি? অনেকেই রাগে ক্ষোব্দ হয়ে বলেছেন ওল্ডার কেয়ার সেন্টার কেয়ারে অনেক মানুষের মৃত্যু হবার পরও কি মূখ্যমন্ত্রীর ঘুম ভাঙ্গেনি। ক্যানাডার সবচেয়ে বেশি ক্যুইবেকে মৃত্যু হবার পরও কি করে মা-বাবা তাঁদের সন্তানদেরকে এমন অনিশ্চিত মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিবেন। একটি বাচ্চা যদি স্কুল থেকে সেই করোনাভাইরাস নিয়ে ঘরে ফিরে এবং সবাইকে সংক্রমিত করে তাহলে ক্যুইবেকের মুখ্যমন্ত্রী কি তার জবাব দিবেন! বিষয়টি ভাবতে ভাবতেই ঘরে ফিরি কিন্তু প্রতিবাদ করাছাড়া কিই-বা করার আছে? পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত ঘরে থাকুন,   সুস্থ থাকুন।  আমরাও চাই কবির ভাষায় বলতে ‘ থাকবো নাকো বদ্ধ ঘরে, দেখব এবার জগৎটাকে  ’  ….. কিন্তু সেই জগৎটা হতে হবে বাঁচার জন্য উপযুক্ত, ভয়হীন শংকাহীন … ঠিক আগের মতো।

সদেরা সুজনপ্রধান নির্বাহী, কানাডা-বাংলাদেশ নিউজ এজেন্সি, সিবিএনএ২৪ডটকম

 

সিবিএনএ/এসএস


সর্বশেষ সংবাদ

দেশ-বিদেশের টাটকা খবর আর অন্যান্য সংবাদপত্র পড়তে হলে cbna24.com

সুন্দর সুন্দর ভিডিও দেখতে হলে প্লিজ আমাদের চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

সংবাদটি শেয়ার করুন