ফিচার্ড বিশ্ব

ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ার ২ কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে: ডব্লিউএইচও

ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে একটি ভবন। ছবি: সংগৃহীত

ভূমিকম্পে তুরস্ক-সিরিয়ার ২ কোটিরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে: ডব্লিউএইচও

ক্রমেই ফুটে উঠছে তুরস্ক ও সিরিয়ায় সোমবারের ভূমিকম্পের ভয়াবহতার চিত্র। দুই দেশে এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন ১৭ হাজারের বেশি মানুষ এবং অন্তত ৬ হাজার ২১৭টি ভবন। পরিস্থিতি বিবেচনা এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার ১৪ লাখ শিশু সহ ২ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও)।

মঙ্গলবার জেনেভায় বোর্ড সভায় ডব্লিউএইচওর সিনিয়র ইমার্জেন্সি অফিসার অ্যাডেলহেইড মার্শাং বলেন, ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে দুই দেশের ব্যাপক বেসামরিক অবকাঠামো এবং স্বাস্থ্য অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যালচনা করে দেখা যায় ২ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যার মধ্যে অতিদরিদ্র রয়েছে ৫০ লাখ মানুষ ।

মার্শাং আরও বলেন, এই সংকট মোকাবেলায় শক্তিশালী ক্ষমতা রয়েছে তুরস্কের তবে যুদ্ধ-বিধ্বস্থ সিরিয়ার জন্য এটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়াবে। কারণ গত ১২ বছর ধরে চলমান গৃহযুদ্ধ দেশটিতে ব্যাপক মানবিক সংকটের মধ্যেই রয়েছে।

ডাব্লুএইচও জানিয়েছে, দুই দেশেই ট্রমা এবং জরুরী অস্ত্রোপচারের কিট সহ জরুরী সরবরাহ পাঠাচ্ছে এবং জরুরী মেডিকেল টিমের একটি নেটওয়ার্ক সক্রিয় করছে।

ডব্লিউএইচওর মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বলেছেন, এটি এখন সময়ের বিরুদ্ধে একটি প্রতিযোগিতা। প্রতি মিনিটে, প্রতি ঘণ্টায় যেটা কেটে যায়, বেঁচে থাকাদের খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

তিনি বলেন, ডব্লিউএইচও বিশেষ করে তুরস্ক ও সিরিয়ার এমন এলাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন যেখানে সোমবারের ভূমিকম্পের পর কোনো তথ্য উঠে আসেনি।

এদিকে ডব্লিউএইচওর ইউরোপ অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ জরুরি কর্মকর্তা ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আরও ভবন ধসের শঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা নিহতের প্রাথমিক সংখ্যা আটগুণ বাড়ার আশঙ্কা করছি। সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় দেশ দুটিতে প্রাণহানির সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৬০০ জন। সেই হিসাবে এর সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন ক্যাথরিন।

ক্যাথরিন বলেন, দুর্ভাগ্যবশত, ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় একই জিনিস দেখতে পাই, তা হলো প্রাথমিক খবরে পাওয়া হতাহতের সংখ্যা পরবর্তী সপ্তাহে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

তিনি সর্তক করেছেন, শীতের মাঝামাঝি তাপমাত্রা এবং তুষারঝড়ের অবস্থার আশ্রয় ছাড়া বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। যা করেনার মত শ্বাসতন্ত্রের ভাইরাসের সঞ্চালন করবে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, যারা তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে না তারা সম্মিলিত পরিবেশে মিলিত হবে এবং জড়ো হবে। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে তাদেরর জন্য মারাত্বক ঝুঁকি তৈরি করবে যদি তাদের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা না করা হয়।

এরআগে তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আভাস দিয়েছে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস)।

সূত্র: এএফপি, আলজাজিরা

 


সংবাদটি শেয়ার করুন